ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে গোপন টিপস জানুন
ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে যারা জানেন না তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি ডাবের পানি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আপনারা অনেকেই আছেন যারা ডাবের পানিতে থাকা পুষ্টির গুনাগুন সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। কিন্তু ডাবের পানি আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
যে পানি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি এবং সমস্যা দূর করে। তাই আপনারা যারা ডাবের পানির উপকার এবং অপকার সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। তাহলে চলুন আলোচনা শুরু করি।
সুচিপত্রঃ ডাবের পানি খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
- ডাবের পানি খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
- ডাবের পানি খাওয়ার ৬ টি অপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ৮ টি উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার কিছু অপকারিতা
- ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় নারকেল খাওয়া যাবে কি
- ডাবের পানির ১০ টি গুনাগুন
- ডাবের পানি কি শিশুদের খাওয়ানো যাবে
- গরমের সময় কেন ডাবের পানি খাবেন
- ডাবের পানি দিয়ে খাওয়ার আইটেম তৈরি করুন
- উপসংহারঃ ডাবের পানি খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
ডাবের পানি খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ যাদের হজম শক্তিতে সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ কোন খাবার খেলে সহজে হজম হতে চাই না এর জন্য কষ্টকাঠিন্য পর্যন্ত গড়িয়েছে তাদের জন্য ডাবের পানি সুপ্রিয় একটি খাবার হতে পারে। ডাবের পানি খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়।
- পানি শূন্যতা দূর করেঃ পানি শূন্যতার সমস্যা বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়।এছাড়াও অনেক মানুষের মধ্যে পানি শূন্যতা হয়ে থাকে। এ কারণে পানি শূন্যতা পূরণের জন্য ডাবের পানি খাওয়ার ফলে শরীরের পানি শূন্যতার সমস্যা দূর হবে।
- প্রসাবে ইনফেকশনঃ যাদের প্রসাবে ইনফেকশন ধরা পড়েছে তারা তো অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খাচ্ছেন। কিন্তু আপনি যদি ওষুধের পাশাপাশি নিয়ম করে ডাবের পানি খেতে পারেন এতে করে আপনার প্রসবের ইনফেকশন দ্রুত ভালো হয়ে যাবে।
- ডায়রিয়া হলে ডাবের পানিঃ যাদের ডায়রিয়া সমস্যা হয় বা হয়ে থাকে তাদের জন্য ডাবের পানি খুব উপকারী হবে। ডায়রিয়া থাকা অবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ফলে খুব দ্রুত ডায়রিয়া ভালো হয়ে যাবে।
- ডেঙ্গু রোগীদের জন্যঃ যাদের শরীরে ডেঙ্গু নামক ভয়াবহ রোগটি দেখা দিয়েছে তাদের অবশ্যই ঔষধ বা অন্যান্য খাবারের নিয়মের সাথে প্রতিদিন ডাবের পানি খেতে হবে। ডাবের পানি খাওয়ার ফলে ডেঙ্গু রোগীর শরীরে শক্তি ফিরে আসবে এবং তাড়াতাড়ি অসুখ ভালো হয়ে যাবে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ যেহেতু ডাবের পানির মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা কম থাকে ঠিক সে কারণেই ডাবের পানি খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে।
- ত্বকের ব্রণ দূর করেঃ যাদের ত্বকে প্রচুর পরিমাণে ব্রণ বের হয় বা এলার্জি লেগেই থাকে এছাড়াও দেখা যায় মাঝেমধ্যে শরীরে ফুসকুড়ি বের হয় তাদের জন্য ডাবের পানি নিয়মিত খেতে হবে। এতে করে ত্বকের তৈলাক্ততা ভাত কেটে যাবে এবং ত্বকের কোষ ভালো থাকবে।
- হার্ট ভালো থাকেঃ ডাবের পানি শরীরের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে যার ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়া থেকে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।
- বয়সের ছাপ পড়তে দেয় নাঃ যারা নিয়মিত ডাবের পানি খেয়ে থাকে তাদের চেহারার মধ্যে এক ধরনের লাবণ্যতা দেখা যায় যার ফলে বয়সের ছাপ সহজে পড়ে না।
ডাবের পানি খাওয়ার ৬ টি অপকারিতা
- ওজন কমাতে সমস্যাঃ যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন বা ডায়েটে আছেন তারা যদি ডাবের পানি খান এতে করে আপনার ওজন কমাতে সমস্যা হবে। কারণ ডাবের পানিতে চিনির পরিমাণ কম থাকলেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালরির রয়েছে। তাই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ডাবের পানি পরিহার করাই ভালো।
- সর্দি কাশি অবস্থায় ডাবের পানি পরিহারঃ ডাবের পানির মধ্যে ঠান্ডা একটা ভাব আছে অর্থাৎ যাদের সর্দি কাশি অনেক বেশি মাত্রায় লেগে আছে তারা চেষ্টা করবেন ডাবের পানি না খাওয়ার ঠান্ডা বা সর্দি কাশি আরো বেড়ে যেতে পারে।
- নাকে পলিপাসের সমস্যাঃ যাদের নাকে পলিপাসের সমস্যা আছে তাদের দেখা যায় যে কিছু খাবার খেলে ঠান্ডা লাগার একটা ভাব চলে আসে এতে করে নাক আটকে আসে। ঠিক তেমনি ডাবের পানি খাওয়ার ফলে নাকে ঠান্ডা দেখা যায় এবং অস্বস্তি ভাব লাগে।
- হৃদরোগের আশঙ্কাঃ ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে যা খাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এবং উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ডায়াবেটিসের সমস্যাঃ যারা প্রতিদিন ডাবের পানি খাবেন তাদের যদি ডায়াবেটিস থাকে সে ক্ষেত্রে শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে এর ফলে ডায়াবেটিসের জন্য সমস্যা হবে।
- কিডনিতে সমস্যাঃ যাদের অলরেডি কিডনির সমস্যা ধরা পড়েছে তারা ডাবের পানি খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন। কারণ ডাবের পানি খাওয়ার ফলে শরীরের কিডনি ও হৃদপিণ্ডকে অকার্য করে তোলে।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ৮ টি উপকারিতা
- নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে শিশুর মস্তিষ্ক ভালো থাকে।
- ডাবের পানি পান করার ফলে ব্লাড প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করে।
- ডাবের পানি পান করলে প্রসাবে যে কোন সংক্রমণ থাকলে তা কেটে যাবে।
- অনেক গর্ভবতী মহিলা আছে যাদের বুক জ্বালাপোড়া করে তার জন্য ডাবের পানি খেলে ঠিক হয়ে যাবে।
- সকালবেলা অনেক গর্ভবতী মহিলার খাবারের প্রতি অরুচি ভাব আসে তাই ডাবের পানি খেলে উপকার হবে।
- ডাবের পানিতে ওমেগা ও ফ্যাটি এসিড থাকার ফলে মা ও শিশু দুজনই ভালো থাকে।
- গর্ভবতী মায়েদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।
- গর্ভবতী মায়ের শরীরের পানি শূন্যতার সমস্যা দূর করে।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার কিছু অপকারিতা
- অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের সমস্যা হতে পারে।
- অনিয়ম করে ডাবের পানি খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া হতে পারে।
- ডাবের পানিতে থাকা পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ও ফ্যাটি এসিড থাকার কারণে আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপকে বাড়িয়ে এবং কুমিয়ে দিতে পাইয়ে।
- এলার্জির রোগীদের জন্য ডাবের পানি খাওয়ার ফলে অ্যালার্জি আরো বেড়ে যেতে পারে।
- যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের ডাবের পানি এড়িয়ে চলাই ভালো।
- সবচেয়ে বড় কথা হলো যে গর্ভবতী মায়েদের শরীরে ঠান্ডা এবং হাঁপানির ভাব রয়েছে তারা ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকবে। যদি খেতে চায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খেতে হবে।
ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় নারকেল খাওয়া যাবে কি
ডাবের পানির ১০ টি গুনাগুন
- পানির পরিমাণ ৯৫ শতাংশ
- ক্যালসিয়াম ০.৬৯ শতাংশ
- পটাশিয়াম ০.২৫ শতাংশ
- নাইট্রোজেন ০.৫ শতাংশ
- লৌহ ০.৫ গ্রাম
- চিনি ০.৮০ গ্রাম
- প্রোটিন ০. ৭২ গ্রাম
- চর্বি ০.২০ গ্রাম
- আশ ০. ৬২ গ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড শুন্য পয়েন্ট ৫৯ শতাংশ
ডাবের পানি কি শিশুদের খাওয়ানো যাবে
- শিশুর পেটের সমস্যা যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাপা, গ্যাস্ট্রিক এবং আলসারের সমস্যা দূর করেন।
- শিশুর খাবার সহজে হজম করে।
- শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
- শিশুর হার গঠনে সহায়তা করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে।
- প্রসাবের জায়গায় সংক্রমণকে ঠেকায়।
- গরমের কারণে শিশুর পানি শূন্যতা দূর করে।
- শিশুর বদহজম দূর করে।
গরমের সময় কেন ডাবের পানি খাবেন
আরো পড়ুনঃ ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয় - তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা দেখুন
ডাবের পানি দিয়ে খাওয়ার আইটেম তৈরি করুন
ডেঙ্গু রোগী বা জ্বরের রোগীদের জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন নিয়মিত ডাবের
পানি খাওয়ার জন্য। এই সময়ে অনেকের মুখে স্বাদ থাকে না। তার কারণে
অনেকে খেতে চায় না বা খেতে চাইলেও পারেনা। তাই আপনি চাইলে খুব সহজেই ডেঙ্গু
রোগীর জন্য একটি ডেজার্ট বা পুডিং বানিয়ে নিতে পারেন। এতে করে খাবারের
স্বাদটা ভিন্ন হবে এবং সেই রোগী এটি খেতেও পছন্দ করবে। তাহলে চলুন বাদ দিয়ে
বানানো তিনটি আইটেম আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
- ডাবের তোকমার শরবতঃ ডাবের শরবত বানানোর জন্য ডাবের পানিকে একটি গ্লাসে ঢেলে নেন এর পরে তার মধ্যে একটু পুদিনা পাতা এবং একটু বিট লবণ দিবেন এরপরে একটু তোকমা মিশিয়ে দিবেন।এছাড়া ডাবের মধ্যে থাকা যে শাশ রয়েছে সেটা কেউ পানির সাথে মিশিয়ে দিবেন। এভাবেই যাদুকরী একটি শরবত তৈরি হয়ে যাবে যা ছোট বড় সকলেই খেতে চাইবে।
- ডাব ও লেবুর শরবতঃ আপনি আরেকভাবে ডাবের শরবত বানাতে পারেন। এক গ্লাস ডাবের পানির মধ্যে দুই চামচ লেবুর শরবত ১ চিমটি বিট লবণ পরিমাণ মতো চিনি এবং তাদের মধ্যে থাকা শাঁস এই পানিতে মিশিয়ে দিবেন এরপরে একটু এলাচের গুড়া দিয়ে নাড়াচাড়া করবেন। এতে করে সুন্দর একটি ডাবের শরবত তৈরি হয়ে যাবে যা আপনার ডেঙ্গুর রোগী খুব সহজেই খেতে পারবে।
- ডাবের ডেজার্টঃ অনেকে ডাবের ডেজার্ট পছন্দ করে থাকেন। ঘরোয়া ভাবে ডাব দিয়ে অর্থাৎ ডাবের পানি এবং ডাবের শ্বাস দিয়ে বাজারের কিছু উপকরণ কিনে খুব সহজে ডেজার্ট বানিয়ে ফ্রিজে রেখে লম্বা সময় ধরে খেতে পারবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url