ছেলে ও মেয়েদের চিড়া খাওয়ার গোপন উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন
চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন যে চিরা আপনার শরীরের
জন্য উপকার নাকি অপকার। তাদের জন্যই আজকের আর্টিকেলটিতে চিড়ার যাবতীয় বিষয়
নিয়ে আলোচনা করা হবে। কোন চিড়া আপনার জন্য খাওয়া ভালো কিভাবে খেতে হবে এ সকল
বিষয় থাকবে।
এছাড়া কি শুধু বড় রাই খাবে নাকি শিশুরাও খাবে সে সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে আজকের এই আর্টিকেলটির মধ্যে। তাই অবশ্যই বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
সূচিপত্রঃ চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- চিড়ার কিছু অপকারিতা রয়েছে দেখুন
- লাল চিড়া নাকি সাদা চিরা কোনটি ভালো
- চিড়া খাওয়ার নিয়ম জানুন
- শিশুদের জন্য চিড়া কতটা উপকারী দেখুন
- গর্ভবতী মহিলাদের জন্য চিড়ার উপকারিতা দেখুন
- ভাত নাকি চিড়া কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর
- ইফতারে দই চিড়া খাওয়ার উপকারিতা দেখুন
- চিড়া খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়
- ওজন কমাতে চিড়ার ভূমিকা
- FAQ চিড়া সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর
- উপসংহারঃ চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
চিড়া প্রাচীনকাল থেকেই খুব জনপ্রিয় এবং পুষ্টিগুণাগুণ সমৃদ্ধ
খাবার। চিড়া খাওয়া দেখা যায় বেশিরভাগ গ্রাম অঞ্চলের দিকে। এমন
একটা সময় ছিল যখন বাড়িতে মেহমান আসলে চিড়া দিয়ে নাস্তা করতে দেওয়া হতো এবং
চিড়ার সাথে পাটালি গুড় এছাড়া যারা একটু ধনী পরিবার ছিল তারা দই ও কলা সাথে
দিত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আজকে এগুলো আর হয়তো অতিথিদের আপ্যায়নে
দেওয়া হয় না।
কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের এখনো কিছু জেলা রয়েছে যেমন বরিশাল পিরোজপুর ও বাগেরহাট
এ সকল অঞ্চলে এখনো বাড়িতে মেহমান গেলে এখনো চিড়ার নাস্তা দেওয়া হয়। তার
মানে বোঝাই যাচ্ছে চির আসলে আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী হতে পারে। চিড়া
শুকনো একটি খাবার যা ধান থেকে রূপান্তরিত হয়।
ভালো চিড়া পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে ভালো জাতের ধান কে নির্বাচন করে চিড়া
ভাঙ্গাতে হবে। আগের দিনে চিড়া ভাঙ্গানো হতো ঢেঁকিতে এবং এটাই বেশি
স্বাদের ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে চিড়া মেশিনে ভাঙানো হয় এরপরেও চিড়ার
মধ্যে অনেক উপকারিতা লুকিয়ে আছে চলুন তাহলে সেই উপকারিতাগুলো জেনে নেই।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ চিরা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এছাড়া আপনার শরীরকে দুর্বলতা থেকে দূরে রাখবে এবং বিভিন্ন ঘাটতি পূরণ করবেন।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ চিড়া খাবারটির মধ্যে আঁশ কম থাকায় এটি খুব সহজে হজম হয়ে যায়। এর ফলে সহজে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
- কিডনির সমস্যা দূর করেঃ আপনারা অনেকেই আছেন যারা দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। তাদের জন্য খুব ভালো একটি খাবার হবে চিড়া কারণ চিড়ার মধ্যে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম কম থাকার কারণে এটি আপনার কিডনিকে ভালো রাখবে।
- ওজন বাড়াতে সহায়তাঃ যাদের বয়সের তুলনায় অতিরিক্ত ওজন কম হয়ে আছে তাদের জন্য চিরা খাবারটি অনেক কার্যকরী হবে। চিড়া ওজন বাড়াতে ভালো ভূমিকা রাখে। তাই অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন দু মুঠো হলেও শিরা খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ যাদের শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক নেই তাই তাদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায় এ কারণে তাদের নিয়মিত চিড়া খেতে হবে এতে করে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
- দাঁতের জন্য উপকারীঃ যাদের দাঁতের সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ মাঝে মাঝে দাঁতের গোড়ালি ব্যথা হয় এবং দাঁতের গুড়া ফুলে যায় তারা চাইলে একটু করে চিড়া খাওয়ার অভ্যাস করতে এতে করে গুড়া মজবুত হবে এবং সমস্যাও দূর হবে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেনঃ আপনারা অনেকেই হয়তো মনে করতে পারেন যে চিরা আবার কিভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করবেন। কিন্তু এটাই সত্যি যে চিড়া খাবারটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক ভালো রাখে। কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকার কারণে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- ত্বক ভালো রাখেঃ চিড়ার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি গুনাগুন। যা খাওয়ার ফলে আপনার ত্বকের কোষগুলোকে ভালো রাখে এবং খারাপ কোষগুলোকে দূর করতে সহায়তা করে।
-
ডায়রিয়ার উপকারীঃ আপনাদের যখন ডায়রিয়া দেখা দিবে তখন অবশ্যই আপনি
ডাবের পানির সাথে চিড়া খাবেন এতে করে আপনার খুব তাড়াতাড়ি ডায়রিয়া ভালো
হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
চিড়ার কিছু অপকারিতা রয়েছে দেখুন
চিড়ার অনেক বেশি উপকারিতা রয়েছে কিন্তু তার পরেও কিছু অপকারিতার লুকিয়ে
রয়েছে। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না যে চিড়া খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে
পারে। তাই অবশ্যই আপনাকে চিড়ার উপকারিতা জানার পাশাপাশি অপকারিতা সম্পর্কেও
ধারণা রাখতে হবে। ধরতে গেলে চিড়ার মধ্যে খুব একটা বেশি ক্ষতিকর দিক নেই
কারন চিড়ার মধ্যে বেশিরভাগ উপকারই রয়েছে।
এরপরেও যতটুকুই অপকার থাকুক সেটা বের করব এবং আপনাদের সাথে আলোচনা
করব। তাহলে চলুন জেনে নেই যে চিড়ার মধ্যে কি কি অপকার লুকিয়ে
আছে। এবং আপনি অবশ্যই ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ পড়ার চেষ্টা করবেন তা না হলে
অনেক কিছুই বুঝতে সমস্যা হবে।
- কোলেস্টেরলের মাত্রা কম বেশিঃ অতিরিক্ত এবং দীর্ঘদিন ধরে চিড়া খাওয়ার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা অতিরিক্ত কমে যাওয়ার ফলে আপনার শরীরের কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন যে দীর্ঘমেয়াদী না করে সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে কিছুদিন খাওয়া বাদ দিতে।
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্যঃ এখন অনেকেই মনে করতে পারেন যে চিড়ার উপকারিতার মধ্যে বললাম চিড়া খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও ভালো থাকে তাহলে এখন আবার কেন অপকারের মধ্যে বলছি।তাহলে শুনুন অতিরিক্ত এবং দীর্ঘমেয়েদের চিড়া খাওয়ার ফলে চিড়ার মধ্যে থাকা শর্করা অতিরিক্ত হয়ে গেলে আপনার কিছু সমস্যা হতে পারে এজন্য চেষ্টা করবেন মাঝে মাঝে খাওয়া বাদ দিতে।
- দাঁতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারেঃ আগেই বলে নিচ্ছি যে চিরা দাঁতের জন্য ক্ষেত্রবিশেষে উপকার এবং অপকার হয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনি যদি চিনি মিশিয়ে চিরা খাওয়ার অভ্যাস করেন এতে করে আপনার সমস্যা হবে। তাই চেষ্টা করবেন চিনি ছাড়া চিড়া খেতে এতে আপনি সঠিক গুনাগুন পেয়ে যাবেন।
লাল চিড়া নাকি সাদা চিরা কোনটি ভালো
চিড়া আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে লাল চিড়া এবং সাদা চিড়া। এটা মূলত
ধানের কারণে হয়ে থাকে।অনেকেই মনে করেন যে শরীরের উপকারের জন্য লাল চিড়া
খাব নাকি সাদা চেরা খাব কোনটি বেশি ভালো হবে। এক কথায় তাদের জন্য উত্তর হল
আপনি যেটাই খান না কেন দুইটাই আপনার শরীরের জন্য ভালো হবে। তবে আপনি চিরা
বাছাই করার পূর্বে ভালো জাতের ধান বাছাই করুন।
এতে করে আপনার ধান যদি ভালো হয় চিরা ও ভালো হবে। আর চেষ্টা করবেন চিড়া
ভাঙ্গাতে যেন কোন ধরনের রাসায়নিক বা ক্যামিকেল ব্যবহার করা না
হয়। এতে করে কিন্তু চিড়ার মধ্যে থাকা গুনাগুন নষ্ট হবে এবং এর ফলে আপনার
শরীরে আরো ক্ষতি দেখা দিতে পারেন। তাই মূল কথা হলো আপনি লাল চিড়া খাবেন
নাকি সাদা চিড়া খাবেন সেটাই কোন সমস্যা নেই। কিন্তু চিড়ার প্রস্তুত
করন যেন ভালো থাকে।
চিড়া খাওয়ার নিয়ম জানুন
চিড়া খাওয়ার খুব একটা বিশেষ কোনো নিয়ম নেই। তবে যেভাবে চিড়া খেলে আপনি বেশি
উপকার পাবেন সেগুলো অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে। চিড়া কি দিয়ে এবং কখন খেলে বেশি
ভালো হয় সেটা জেনে রাখুন। তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয় তাই
চিড়ার সাথে অতিরিক্ত কোন কিছু না মিশিয়ে খাওয়াটাই বেশি ভালো হবে।
কারণ এতে করে চিড়ার মধ্যে থাকা গুনাগুন গুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আর
আপনাকে মনে রাখতে হবে যে চিরা কিন্তু অতিরিক্ত এবং দীর্ঘমেয়াদি খাওয়া যাবেনা
এতে করে আপনার অপকার ডেকে নিয়ে আসবে। তাই চেষ্টা করবেন চিরা খাওয়ার পর
আপনি উপকার পেলে তখন কিছুদিন আবার খাওয়া বাদ দিতে। এতে করে আপনার আর কোন
সমস্যা হবে না।
- সকালে খালি পেটে চিড়া খাওয়াঃ আপনি যদি সকালের নাস্তা চিড়া রাখেন তাহলে চেষ্টা করবেন ১০-১৫ মিনিট আগে এটা ভিজিয়ে রাখতে এরপর এরমধ্যে কলা দিয়ে এবং চিনি অল্প পরিমাণে অথবা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন এতে করে আপনি বেশি ফলাফল পাবেন।
- রাতের খাবারের চিড়াঃ আপনি চাইলে রাতে ঘুমানোর এক দুই ঘন্টা আগে চিড়া ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পরে এর মধ্যে দুধ, কলা, আম, লবণ এগুলো মিশিয়ে বেশি সুস্বাদু বানিয়ে খেতে পারেন। তবে আপনি যেভাবেই খান না কেন এর উপকারিতা ঠিকই পাবেন।
- বিকেলের নাস্তায় চিড়াঃ অনেকে আছেন যারা চিড়া ভাজা খেতে পছন্দ করেন। তাই আপনি চিড়া ভেজে একটি কৌটাতে ভরে টেবিলের উপর রেখে দিতে পারেন এতে করে বিকেলের দিকে যখন কিছু খেতে মন চাইবে তখন একটু করে খেতে পারবেন।
শিশুদের জন্য চিড়া কতটা উপকারী দেখুন
বড়দের যেমন চিড়া খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে অনেক উপকার পাওয়া যায় ঠিক
তেমনি শিশুদের ক্ষেত্রেও চিরা খাওয়ালে অনেক উপকার হয়। শিশুদের জন্য এটি
মুখরোচক একটি খাবার হবে এতে করে খুব সহজে শিশুকে খাওয়ানো যাবে। শিশুকে
খাওয়ানোর জন্য অবশ্যই কিছুক্ষণ আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন এরপর যখন নরম হয়ে
যাবে তার মধ্যে একটু কলা আর দুটি খেজুর দিয়ে একদম নরম করে মাখাবেন।
এরপর সেই খাবারটি আপনার শিশুকে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন।দেখবেন আপনার শিশুও খুব
আনন্দের সাথে এই খাবারটি খাচ্ছে এবং খাওয়ার ফলে আপনার শিশুর শরীরের জন্য অনেক
উপকার হবে যেমন আপনার শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, শরীরের
দুর্বলতা দূর হবে, হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
হবে, শরীরের শক্তি যোগাবে, শিশুর মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকবে এবং রাতে ভালো
ঘুম হবে।
তাই একটি শিশুকে অবশ্যই চিড়া খাওয়াতে হবে তবে চেষ্টা করবেন অতিরিক্ত না খাইয়ে
প্রতিদিন এক মুঠো করে খাওয়ানোর এবং মাঝে মাঝে এটা খাওয়ানো বাদ দিতে
হবে। কারণ অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আবার কিছু সমস্যা হতে পারে। আগেকার দিনে
বেশিরভাগ মায়েরাই তাদের শিশুদেরকে চিরা খাওয়াতো এতে করে তাদের সন্তানের
স্বাস্থ্য ভালো থাকতো।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য চিড়ার উপকারিতা দেখুন
গর্ভ অবস্থায় সব মহিলাদেরই খাবার খেতে অসুবিধা দেখা দেয় বিশেষ করে এই সময়
কিছু খেতে হলে শুধু
বমি বমি ভাব হয়। এই সময়টা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। কারণ
এই সময় যদি না থাকে এবং পুষ্টির অভাবে ভোগে তাহলে সে তোর অসুস্থ হবেই পাশাপাশি
তার অনাগত সন্তানের উপরেও একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়বেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই
দেখা যায় এই সময়ে প্রতিটি মায়ের রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে।
এছাড়া ও অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় খাবারের মধ্যে
চিড়া একটি উপকারী খাবার হিসেবে বিবেচনা করা যায়।গর্ভবতী অবস্থায় মহিলাদের
খুব কমন একটু সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া। আর ঠিক সেটারই ওষুধ হিসেবে কাজ
করবে চিড়া। কারণ চিড়ার মধ্যে আশ জাতীয় উপাদান না থাকার কারণে এটি খুব
সহজে হজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
এ ছাড়া আর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরের দুর্বলতা দূর
করে, শরীরের শক্তি যোগায়, ভালো ঘুম হয়, দুশ্চিন্তা কম হয়
ইত্যাদি। তাই আপনারা যারা গর্ভধারণ করছেন তারা অবশ্যই চেষ্টা করবেন প্রতিদিন
একটু করে চিড়া,কলা ও দই একসাথে খাওয়ার।
ভাত নাকি চিড়া কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর
অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে আপনার শরীরের জন্য ভাত নাকি চিড়া কোনটি বেশি
স্বাস্থ্যকর হবে।অনেকেই আছেন যারা সকালের নাস্তায় চিড়া ও কলা খেয়ে
থাকেন। এতে করে তাদের শরীরের অনেক ধরনের সমস্যা দূর হয় যেমন যে শরীরের
দুর্বলতা দূর করে। এছাড়া যারা সকালের নাস্তায় ভাত দিয়ে শুরু করে তাদের
একটু শরীরের মধ্যে ক্লান্তি ক্লান্তি ভাব লেগে থাকে। স্বাভাবিক সুস্থ জীবন
যাপনের জন্য তিন বেলা ভাতের পরিবর্তে চেষ্টা করবেন বইলা ভাত খাওয়ার।
এতে করে দুপুর রাতের বেলায় ভাত রাখবেন এবং সকালের দিকে চিড়া মুড়ি কলা এ জাতীয়
খাবার খাওয়ার। যেহেতু চিড়ার মধ্যে ৭০% কার্বোহাইড্রেট এবং ৩০% চর্বি রয়েছে তাই
খুব সহজে বুঝা যায় যে এটা আমাদের জন্য কতটা উপকারী।আপনি যদি শরীরের জন্য
স্বাস্থ্যকর কোন খাবার খুঁজতে থাকেন তাহলে অনায়াসে আপনার খাবার টেবিলে চিরা
রাখতে পারেন এতে করে আপনার স্বাস্থ্য অনেক ভালো থাকবে।
ইফতারে দই চিড়া খাওয়ার উপকারিতা দেখুন
যেহেতু আমরা সারাদিন রোজা থাকি এর ফলে কোন কিছু খাওয়া হয় না তাই দেখা যায়
যে শরীরে অনেক পুষ্টির ঘাটতি হয়ে যায়। এর কারণে অবশ্যই আমাদের ইফতারিতে
এমন কিছু খাবার রাখা উচিত যে খাবারগুলো খাওয়ার ফলে অল্পতেই পুষ্টির ঘাটতি পূরণ
করতে পারেন। ঠিক তেমনি একটি খাবার হল ইফতারিতে দই এবং চিরা রাখার।
এতে করে দই চিড়া একসাথে খাওয়ার ফলে সারাদিনের ক্লান্তি দূর হবে এবং এটি
প্রস্তুত করতেও খুব অল্প সময় ব্যয় হবে। চিড়ার খাবার প্রস্তুতে শুধু
অল্প সময়ই নয় এটি খেতেও খুব সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর হয়ে থাকে। তাই চলুন
জেনে নেই যে ইফতারিতে দই এবং চিড়া খাওয়ার ফলে আমরা কি কি উপকারিতা পেতে পারি
নিচে আলোচনা করা হলো।
- শক্তি সরবরাহ করে
- ক্লান্তি দূর করে
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
- ভালো ঘুম হয়
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
- মানসিক চাপ দূর করে
- পানি শূন্যতার দূর করে
- এসিডিটি নিয়ন্ত্রণ রাখে
- পেট ঠান্ডা রাখে
- পাকস্থলী ভালো থাকে
- প্রোটিনের ভালো উৎস থাকে
- হাড় গঠনে ভূমিকা রাখে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
চিড়া খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়
যাদের মধ্যে এমনটা রয়েছে যে মাঝে মাঝে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। কোন কিছু খাবার
খাওয়ার ফলে অল্পতেই ডায়রিয়া দেখা যায়। তাদের জন্য ডায়রিয়া
অবস্থায় উপকারী খাবার হিসেবে বাছাই করা উচিত চিড়া। অনেকে এই সময়
ডাবের পানি খেয়ে থাকে তবে এটাও ভালো। কিন্তু ডাবের পানির পাশাপাশি অবশ্যই
চেষ্টা করতে হবে চিড়া খেতে।
কারন চিড়া খাওয়ার ফলে খুব সহজে আপনার শরীরের পানি শোষণ করে নিতে পারে এবং এর
কারণে খুব তাড়াতাড়ি ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিজ্ঞানী গবেষণা
থেকে বলা হয়েছে যে ডায়রিয়া হলে ওষুধ যেমন কাজ করে তার চেয়ে বেশি কাজ করে
চিড়া।তাই সকলেরই উচিত এই ডায়রিয়া অবস্থায় চিড়া খাওয়ার। এতে করে খুব
তাড়াতাড়ি আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং অন্যান্য সমস্যা গুলিও কেটে যাবে।
ওজন কমাতে চিড়ার ভূমিকা
আপনারা যারা আছেন অতিরিক্ত মোটা বা ওজন বেড়ে যাচ্ছে তাদের জন্য যেটা খাবারের
ডায়েট লিস্ট হয়েছে সেখানে আজই যোগ করুন চিড়া। কারণ ওজন কমাতে
এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিড়ার ভূমিকা অনেক বেশি। ওজন কমানোর জন্য
আপনি সকালের নাস্তায় প্রতিদিন দই মোট করে সাথে একটি কলা দুটি খেজুর ও সামর্থ্য
থাকলে দই দিয়ে মিশিয়ে খাওয়ার।
এছাড়া আপনি বিকেলের দিকে যখন হালকা কিছু খেতে মন যায় বা খোদা খোদা ভাব হয় তখন
একটু চিরা মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন। আর যদি এটা খেতে সমস্যা হয় তাহলে
পানিতে ভিজিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। ওজন কমানোর জন্য যতগুলো খাবার রয়েছে
তার মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল চিরা।
FAQ চিড়া সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর
প্রশ্নঃ চিড়া কতক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে?
উত্তরঃ ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই হবে।
প্রশ্নঃ চিড়া গুড় খাওয়ার কি কি উপকারিতা রয়েছে?
উত্তরঃ চিড়াতে আসার পরিমাণ কম থাকার কারণে এটা খুব সহজে ডায়রিয়া
নামক সমস্যা দূর করতে পারে।
প্রশ্নঃ ভাতের বদলে চিড়া খেলে কি হবে?
উত্তরঃ ভাতের বদলে চিড়া খেলে আপনি ভাতের চেয়ে বেশি উপকার পাবেন।
প্রশ্নঃ চিড়া কোন সময় খেলে ভালো হয়?
উত্তরঃ সকালের নাস্তায় চিড়া ও কলা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
প্রশ্নঃ চিড়া খেলে কি মোটা হওয়া যায়?
উত্তরঃ হ্যাঁ চিরা খেলে ওজন বাড়ানো যায়।
প্রশ্নঃ চিড়া খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ চিরা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং সহজে খাবার হজম হয়।
প্রশ্নঃ গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কি চিরা উপকারী?
উত্তরঃ হ্যাঁ তাদের জন্য চিড়া নামক খাবারটি অনেক উপকারী।
প্রশ্নঃ লাল চিড়া নাকি সাদা চিড়া কোনটি ভালো?
উত্তরঃ লাল ও সাদা উভয়ই ভালো কাজ করে শরীরের জন্য।
প্রশ্নঃ চিরাতে কত ক্যালরি থাকে?
উত্তরঃ ১০০ গ্রাম চিড়াতে প্রায় ১৩০ গ্রাম ক্যালোরি থাকে।
প্রশ্নঃ চিড়া খেলে কি ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকে?
উত্তরঃ চিড়া খেলে সুগারের মাত্রা বাড়ে না তাই ধরে নেওয়া হয় যে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
উপসংহারঃ চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনারা যারা উপরে উল্লেখিত লেখাগুলো সম্পূর্ণ পড়েছেন তারা হয়তো এতক্ষণে বুঝে
গেছেন যে চিরা আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী। উপরে উল্লেখ করা হয়েছে চিরা
খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা, ওজন কমাতে চিড়ার ভূমিকা, গর্ভবতী মহিলাদের
জন্য চিরা কতটা উপকারী, বাচ্চাদের জন্য চিরা কেমন, ইফতারিতে চিড়া খেলে কি
হয়, ভাত নাকি চিড়া কোনটি ভালো, লাল চিড়া নাকি সাদা চিঁড়া এরকম অনেক
বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এরপরেও যদি আপনাদের চিড়া সম্পর্কে কোন কিছু জানার থাকে যা আমার আর্টিকেলটির
মধ্যে লেখা নেই তাহলে অবশ্যই মন্তব্য করে যাবেন অথবা যোগাযোগ করার
জন্য সুযোগ রয়েছে সেখান থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করে জেনে নিতে
পারেন। আর আমার লেখাটি পড়ে যদি ভালো লাগে ওয়েবসাইটকে সাবস্ক্রাইব
করবেন। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url