বিটরুটের ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত দেখুন

 

দৈনন্দিন জীবনে আমাদেরকে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন কত রকমের খাবারই না খেতে হয়। কিন্তু সেই খাবারগুলো আমরা কি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাচ্ছি? এরকম আর কয়জন আছে যারা জেনে বুঝে খাবার খাচ্ছে এবং পুষ্টিগত খাবার জাতীয় শরীরের মান উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। এরকম খাবারের মধ্যেই বিটরুট খাবারটি বর্তমানে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 

বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা

বিটরুট খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের অনেক উপকারি হচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ খেলে কি হয় বিদ্যুৎ স্বাস্থ্যের জন্য কেমন উপকার এবং রূপচর্চায় কতটা কার্যকরী ভূমিকা রাখে এবং বিটরুটের জুস খেলে কি কি হতে পারে এ সকল বিস্তারিত প্রশ্নের সমাধান নিয়েই আজকের আর্টিকেলটি লেখা হচ্ছে। 

সূচিপত্রঃ বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা

বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা

বিটরুট খাবারের মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারিতা ও অপকারিতা। তবে অপকারের চেয়ে বিটরুট খাওয়ার ফলে বেশিরভাগ উপকারিতায় পাওয়া যাচ্ছে। বিটরুট অনেক প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি ফল। বিটরুটের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, বিটরুটে রয়েছে ফাইবার যা শরীরের জন্য অনেক উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে। বিটরুট যেকোনো ভাবেই খেতে পারেন চাইলে সেটা তরকারি হিসেবে বা এমনি কাঁচা মুখে চিবিয়ে। 
এমনকি সেটা জুস করেও খেতে পারেন এছাড়াও আপনি ত্বকের যত্নে মুখে মাখতে পারেন এতে করে আপনার মুখের কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর হবে, মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হবে, ব্রণ উঠা দূর হবে এরকম অনেক সমস্যার সমাধান হবে। বিটরুট খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে যেমন বিদ্যুৎ খাওয়ার ফলে এ্যানাফিল্যাক্সিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
যার কারণে শরীরে অতিরিক্ত এলার্জি দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত এলার্জির লক্ষণ হল শরীরের মধ্যে গোটা বের হওয়া এবং চাক চাক লাল হয়ে ফুলে যাওয়া। এছাড়াও কারো যদি হাঁপানির সমস্যা থাকে  এরকম মানুষদের জন্য অতিরিক্ত বিটরুট না খাওয়াটাই ভালো। তবে আপনি চাইলে অল্প পরিমাণে খেয়ে দেখতে পারেন সমস্যাটা ক্ষণস্থায়ী হয় কিনা। 

যেসব সমস্যা হলে বিটরুট পরিহার করবেন 

বিটরুট শীতকালে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এবং সেই সময়ে দামও অনেকটাই কম থাকে। এটি ভীষণ পুষ্টিকর কিন্তু শরীরের কিছু সমস্যা থাকলে এটি না খাওয়াই ভালো তাই জেনে নিন যে কি কি সমস্যা হলে বিটরুট খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। আপনার শরীরে যদি রক্তচাপ কম হয় তাহলে বিটরুট খাবেন না। কারণ বিটরুট খেলে রক্তচাপ আরো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

অনেকেরই কিডনিতে পাথর জমানোর সমস্যা দেখা দেয় তাই এই ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ খাওয়া পরিহার করবেন। কারণ বিটরুটের মধ্যে আছে অক্সালেট উপাদান যা শারীরিক সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে তাই এই ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি বিটরুট পরিহার করে চলবেন। আবার এখন অনেক মানুষের শরীরে ডায়াবেটিস নামক রোগ বাসা বেধেছে।  তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে আপনারা কোন ভাবেই বিটরুট খাবেন না কারণ বিটরুটের মধ্যে গ্লাসেমিক ইনডেক্স অত্যন্ত চড়া। 

ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় এতে করে আপনি আরো অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন তাই বিটরুট খাওয়া থেকে দূরে থাকাটাই সঠিক হবে। আরেকটা সমস্যা যাদের আছে শরীরে অতিরিক্ত এলার্জি। যাদের শরীরে অতিরিক্ত এলার্জি রয়েছে তারা বিটরুট খাওয়া থেকে দূরে থাকুন কারণ বিটরুট খাওয়ার ফলে আপনার ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে। আর প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন। 

বিটরুটের জুসে যে সকল উপকারিতা রয়েছে 

বিটরুটের রস করে খাওয়ায় অনেক উপকারিতা রয়েছে। বিটরুট আপনি যেভাবেই খান উপকারিতা পাবেন তবে রস করে খেলে কি কি উপকার পেতে পারেন সেগুলাই এখন বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বিটরুটের রসে বা জুসে যে সকল উপকারিতা বা কার্যকারিতা রয়েছে নিম্নে দেওয়া হলো:
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ বিটরুটের রস করে খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। বাইরে বৃষ্টি হলে আমরা ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে খুব সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। এর কারণে আমাদের জ্বর, সর্দি, কাশির মতো নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। এই সময়ে সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত বিটরুটের রস খাওয়ার অভ্যাস করে তুলুন এতে করে উপকারিতা পাবেন। 
  • ত্বক উজ্জ্বল করেনঃ বিটরুট আপনার ত্বকের জন্য অনেক ভালো কারণ বিটরুটে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি যা আপনার ত্বককে সুস্থ রাখতে এবং দাগ মুক্ত রাখতে অনেক ভূমিকা পালন করে।  
  • স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে ঃ বিটরুট খাওয়া আপনার শরীর এবং মস্তিষ্ক উভয় দিককে সচল রাখে। আপনাকে সুস্থ রাখতে এবং স্ট্রোক হওয়া থেকে দূরে রাখবে বিটরুটের জুস খাওয়ার কারণে। তাই প্রতিদিনের তালিকা চেষ্টা করবেন একটু পরে হলেও বিটের রস খেতে। 
  • চুল পড়ার সমস্যা দূর ঃ যে সকল ভাইয়া ও আপুদের চুল পরার সমস্যা রয়েছে আপনারা নিয়মিত বিটরুট খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এতে করে আপনার ত্বক ও স্বাস্থ্যের পাশাপাশি আপনার চুল পড়া ও বন্ধ হবে এবং সুন্দর চুল হবে।
  • ক্যান্সারের সমস্যা দূর করে ঃ বিটরুটের রস পান করলে আপনার শরীরকে ক্যান্সার নামক কঠিন রোগ থেকে রক্ষা করবেন। এর ভিতরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আন্টি ইনফ্লামেটরি নামক বিশেষ জিনিস যা ক্যান্সারের প্রতিরোধ করে। 
  • মাসিকের সমস্যা দূর করে ঃ বিটের রস আমাদের শরীরের জন্য সত্যিই অনেক ভালো। যাদের পিরিয়ডের সমস্যা আছে তাদের জন্য বিটরুট গুরুত্বপূর্ণ উপকারী খাবার। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে এতে করে পিরিয়ডের সমস্যা দূর হয়। 
  • ওজন কমায় ঃ যে সকল ভাইয়া বা আপুরা অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত ওজন কমাতে চান তাদের জন্য ভালো একটি খাবার হলো বিটরুট। কারণ এতে প্রচুর ক্যালোরি ও চর্বি না থাকায় দ্রুত কাজ করে আপনার ওজন কমাতে। 
  • চোখের জন্য উপকারিতা ঃ যাদের চোখে সমস্যা রয়েছে তাদের উচিত প্রতিদিনই খাদ্য তালিকায় বিটরুট রাখা। কারণ বিটরুটে রয়েছে লুটেইন নামক কিছু উপাদান যা একটি সুপার হিরোর মত আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তিকে বৃদ্ধি করে। 
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ঃ বিটরুটে নাইট্রেট নামক কিছু উপাদান আছে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন বেডরুট খায় তখন এই নাইট্র অক্সাইড নামে একটি বিশেষ পদার্থ তৈরি করে যা আমাদের রক্তনালীকে বড় হতে সাহায্য করে আর উচ্চ রক্তচাপ এর আক্রান্ত থেকে বাঁচিয়ে রাখে। 

গর্ভাবস্থায় বিটরুট এর উপকারিতা

আমরা কম বেশি সবাই বিটরুটের সাথে পরিচিত। বিটরুটের মধ্যে অনেক গুনাগুন রয়েছে যা একজন গর্ভবতী মহিলার অনেক ঘাটতি দূর করে। আপনারা অনেকেই জানেন না যে গর্ভাবস্থায় বিটরুট খেলে কি কি উপকারিতা পাবেন বিটরুট মূলত একটি সবজি পক্ষান্তরে এটি সুপার ফুড। আপনারা যারা এসব যেটা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আলোচনা করা হলো। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলারা বিটপুট খেলে কি উপকৃত হতে পারবে এ বিষয়ে আলোচনা করা যাক। 
  • আয়রনের ঘাটতি দূর করে : একজন গর্ভবতী মহিলার শরীরে প্রচুর আয়রনের প্রয়োজন পড়ে। এই প্রয়োজন পূরণের জন্য সেই মহিলা যদি প্রতিদিন খাবার তালিকায় বিটরুট রাখে তাহলে তার আয়রনের উৎস হবে। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে : গর্ভ অবস্থায় অনেক মানুষেরই এই কমন সমস্যাটা দেখা দেয়। অনেক সময় গর্ভবতী মায়ের শরীরের ফোলা ফোলা ভাব হয় এবং এর কারণে কষ্টকাঠিন্য দেখা দেয়। বিটরুটে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যা আপনার হজম শক্তিকে সহজ করে। এই কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিট রুট খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এতে করে উপকারিতা পাবেন। 
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে : গর্ব অবস্থায় আপনার ওজন কমানো এবং পর্যাপ্ত ওজনের মধ্যে থাকা আপনার ডায়েটের খাদ্য তালিকায় কাঁচা বিটরুট রান্না করুন এতে করে আপনার ওজন গর্ভ অবস্থায় স্বাভাবিক থাকবে।  
  • রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখেন : বিটরুট কম গ্লাইসেমিক যুক্ত খাদ্য হওয়ার কারণে এটি গুলুকোজে রূপান্তরিত হয় এবং রক্তের মধ্যে শোষিত হতে অনেক বেশি সময় নেয় যার ফলে গর্ভবতী মহিলার শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। 
  • ভিটামিন যোগায় : গর্ভকালীন অবস্থায় একজন মহিলার জন্য প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনের প্রয়োজন পড়ে সেই ঘাটতি দূর করতে বিটরুট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 
  • রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে : গর্ভকালীন অবস্থায় বিভিন্ন আয়রন প্রোটিন ক্যালোরি ইত্যাদির মাত্রা দেশের প্রয়োজন পড়ে যার কারণে মায়েদের রক্তের কমে যায়। তাই এই সমস্যা দূরীকরণে বিটরুট খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এতে করে শিশু এবং মা দুজনই ভালো থাকবে।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করে : গর্ভাবস্থায় মহিলাদের স্বাভাবিকভাবে বমির ভাব বেশি থাকে। এ কারণে তারা কিছু ছেলে সহজে হজম করতে পারে না। এইজন্য তার উচিত গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার অভ্যাস করা। 
বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা

রূপচর্চায় বিটরুটের কার্যকারিতা 

সুন্দর ত্বক কে না পছন্দ করে। আমরা কম বেশি অনেকে আছি যারা সুন্দর ত্বকের জন্য অনেক ঘরোয়া উপায়ে রূপচর্চা করে থাকি। কিন্তু সেটা কতটা সঠিক আমরা কেউই জানিনা। তাই আজকে নিয়ে আসলাম রূপচর্চায় বিটরুট।
আপনি কিভাবে বিদ্যুৎ দিয়ে আপনার ত্বক সুন্দর রাখবেন অর্থাৎ ডার্ক সার্কেল ঠোঁটের কালচে দাগ এরকম নানারকম সমস্যা দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। বিটরুট দিয়ে যেমন ত্বক সুন্দর রাখা যায় তেমনি আবার চুল পড়া প্রতিরোধেও ব্যবহার করা যায় চলুন সে সম্পর্কে জেনে আসি। 
  • বিটরুট এর রস করে দুধ এবং মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করবেন। তারপর আপনার মুখের ডার্ক সার্কেল এর উপরে ১৫ মিনিট মাখিয়ে রাখবেন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। 
  • চুলে প্রাকৃতিক রঙের আভা আনতে চাইলে এক কাপ গাজরের রসের সাথে আধা কাপ বিটরুটের রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে চুলে মাখুন ২ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন এতে করে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে চুলের গোড়া মজবুত হবে। 
  • বিটরুটের রসের সঙ্গে টক দই ও কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসেজ করুন ১০ মিনিট দেখে ধুয়ে ফেলুন এতে করে ত্বক উজ্জ্বল হবে। 
  • ভিনেগার ও মিমের রসের সাথে বিটরুটের রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান এতে করে আপনার চুলের খুশকি দূর হবে। 
  • বলিরেখা দূর করতে সপ্তাহে ২-৩ দিন বিটরুটের সাথে মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান। 
  • বিটরুট স্লাইস করে মুখে ও গলার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন এবং ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। 
  • আপনার ঠোঁটে যদি কালচে ভাব থাকে এবং এটা দূর করার জন্য বিটরুটের রস একসাথে করে লেবু দিয়ে কিছুক্ষণ ঘসতে থাকবেন তাহলে ঠোঁটের কালো ভাব উঠে যাবে এবং ঠোট গোলাপি হবে। 

বিটরুট শিশুদের জন্য নিরাপদ কি না 

আমরা সকলেই জানি বিটরুট আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। কিন্তু অনেকেই জানিনা যে শিশুদের জন্য বিটরুট কতটা নিরাপদ। তাই শিশুদের জন্য বিদ্যুৎ ঝুঁকিপূর্ণ নাকি উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে আলোচনা করব। যেন সব অভিভাবক রাই দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর করে তার সন্তানকে সঠিক খাবার মুখে তুলে দিতে পারেন। 

শিশু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিটরুট শিশুদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী একটি খাবার। বিটরুটে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি, এবং পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, লৌহ খনিজ ইত্যাদি বিভিন্ন উপাদান মিশ্রিত। এসব উপাদানের ফলে ডায়রিয়া, রাতকানা, গ্লোসাইটিস, রিকেট ইত্যাদি এ ধরনের রোগের ঝুঁকি থেকে শিশুদের রক্ষা করে নিয়মিত বিটরুট খাওয়ার ফলে। 

তাছাড়া শিশু যদি রক্তস্বল্পতায় ভোগে তাহলে নিয়মিত বিটরুট খাওয়াতে পারলে অনেক উপকার পাবেন। বিপ্রুক নামক সবজি রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করে এবং হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে বিদ্রোত শিশুকে খাওয়ানোর সময় একটু সাবধানতা অবলম্বন করে খাওয়াতে হবে। চিকিৎসকরা বলেন শিশুর বয়স এক বছরের নিচে হলে তাকে এ ধরনের খাবার খাওয়ানো যাবে না। 

অর্থাৎ বছরের উপরে বাচ্চাকে বিদ্যুৎ খাওয়াতে পারেন। খাওয়ার পরিমাণটা হবে দুই চামচ এতে করে বাচ্চার শরীরের সকল দিক ঠিক থাকবে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে খাবারের পরিমাণটাও বৃদ্ধি করা যাবে। আরেকটা বিষয় মনে রাখবেন শিশুকে যদি বিট খাওয়ানোর পর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই খাওয়ানো বন্ধ রাখুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।  

বিটরুটের পাউডার ও বিটরুট খাওয়ার নিয়ম

বিদ্যুৎ পাউডার একটি প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান যার শরীরের জন্য অনেক উপকারী। বিট পাউডার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে শক্তি বৃদ্ধি করে শারীরিক সহনশীলতা বৃদ্ধি করে।বিটরুট আপনি অনেকভাবেই খেতে পারবেন। তবে আপনি যদি বিটরুট পাউডার করে খেতে চান সেক্ষেত্রে কিছু নিয়ম করে যাতে করে আপনার স্বাস্থ্যে উপকার হয়। তো চলুন কিভাবে এবং কোন নিয়মে খাবেন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক। 
  • পানির সাথে মিশিয়ে: এক গ্লাস পানির সাথে এক চামচ বিট  পাউডার মিশিয়ে প্রতিদিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পান করার চেষ্টা করবেন এতে করে আপনার শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি পাবে। 
  • জুসের সাথে : আপেল, আম ও কমলার জুসে র মধ্যে বিট পাউডার দিয়ে খেতে পারেন। 
  • সুপ বা  সসের সাথে : সুপ বা সসে বিট পাউডার মিশিয়ে স্যুপের রং কে আরো আকর্ষণীয় করে খেতে পারেন।
  • ওটমিল বা পোরিজ: ওটমিল বা পড়িস রান্না করার সময় পাউডার দিয়ে ব্রেকফাস্টে রাখতে পারেন এতে করে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর একটি খাবার খাওয়ার সুযোগ হবে। 
  • সালাদ ড্রেসিং এর সাথে : আপনার সালাদের ড্রেসিং এ সামান্য বিটরুট রাখতে পারেন এটি স্বাদে এবং রঙে সৌন্দর এনে দিবে এতে করে আপনার খাওয়ার চাহিদাও পারবেন। 
বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা

পেটের সমস্যা থাকলে বিটের তৈরি খাবার খেয়ে সমাধান 

কম বেশি আমাদের সকলেরই পেটের সমস্যা হয়ে থাকে। ঠিকমতো সাফ হয় না কিংবা গ্যাস লেগেই থাকে। এইসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিটরুটের ভূমিকা অনেক বেশি। হজম জনিত সমস্যার কারণে এই বিট রোড খুবই কার্যকরী সমাধান দিয়ে থাকে। এই সবজি খেলে এর অনেক গন্ডগোলের সমস্যা ঠিক হয়ে যায়। তো চলুন আলোচনা করা যাক। 
  • ফাইবারে পরিপূর্ণ : এই বিটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আপনার খাবারের হজমকে বৃদ্ধি করে এবং মলকে নরম করতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকলে সেটাকে দূর করে দেয় তাই প্রতিদিন বিটরুটের জুস খাওয়ার চেষ্টা করবেন। 
  • প্রিবায়োটিক সবজি : বিটরুট এক প্রকার প্রিবায়োটিক  সবজি যা আপনার ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। খাবার হজম হয় এবং পুষ্টি শোষণেও সাহায্য করে। এর জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং পেটের প্রদাহ কমে। 
  • অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান : বিটের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি  উপাদান রয়েছে। এটি পেটের প্রধান কমাতে সাহায্য করে। এমনকি লিভারে জমে থাকা টক্সিন কেও বের করে দেয় এই সবজির রস। 
  • ডাইজেস্টিভ এনজাইমকে স্টিমুলেট করে : বিট রোড পিত্তরস উৎপাদনে সহায়তা করে। এর জোরে খাবার দ্রুত হজম হয়। প্রোটিন ও ফ্যাটকে হজম হতে সাহায্য করে পাশাপাশি এসিড রিফ্লাক্সের সমস্যাকে দূর করে। 

সারাবছর বিটরুট ঘরে সংরক্ষণ রাখার উপায় 

বিটরুট দেখতে যেমন সুন্দর পুষ্টিগুণেও তেমন সমৃদ্ধ। রক্তস্বল্পতা দূর করা থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অংশের সমস্যার সমাধান করে থাকে এই বিটরুট। যেহেতু বিটরুট আমাদের খুবই উপকারী একটি সবজি এবং বিটরুট একটি শীতকালীন সবজি যা শীতকালে বেশি বাজারে পাওয়া যায় তাই আমরা চাইলে এই সময় বেশি করে কিনে ঘরোয়া কিছু উপায়ে রেখে দিতে পারি যেন সারা বছরই বিটরুট খাওয়ার সুযোগ পাই। তাই চলুন বিটরুট সংরক্ষণের কিছু ঘরোয়া টিপস নিয়ে কথা বলা যাক। 
  • রেফ্রিজারেটরে  সংরক্ষণ করুন: বিটরুট সংরক্ষণ করার প্রথম পদ্ধতি হলো রেফরিজারেটরে করে  রেখে দাওয়া। এই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে চাইলে প্রথমে বিটরুট ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে এরপর পানি গুলো ঝরিয়ে ঝরিয়ে নিয়ে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ বা কনটেইনারে করে রাখতে পারেন। এই পদ্ধতিতে রাখলে দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত বিটরুট ভালো থাকে। 
  • ডিপ ফ্রিজের সংরক্ষণ : বিদ্যুট সংরক্ষণের দ্বিতীয় ধাপ হলো ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা। এতে প্রথমে বিটরুট গুলো টুকরো করে কাটতে চাইলে অথবা আস্ত করেও রাখা যাবে। এভাবে রাখলে ৬ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত বিটরুট ভালো থাকে।
  • ব্লেন্ডারে পেস্ট করে রাখা : আপনি যদি মনে করেন আদা রসুন এর মত ব্লেন্ডারে পেস্ট করে ফ্রিজে রাখবেন তাহলে এভাবেও অনেকদিন যাবত বিটরুট ভালো থাকবে।
  • শুকিয়ে সংরক্ষণ করা : আপনি যদি মনে করেন বিটরুট রোদে শুকিয়ে রাখবেন এটাও করা যাবে। প্রথমে বিটরুট গুলো ছোট ছোট করে কেটে ভালোমতো শুকিয়ে ব্লেন্ডারে গুড়া করে রেখে দিবেন এতে করে সারা বছরই সংরক্ষণ করা যাবে। 
  • বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিটরুট সংরক্ষণ করলে সারা বছরই ব্যবহার করা যায়। সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ করলে বিটরুটের গুণগত মান ভালো থাকবে। বিটরুটের মধ্যে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মান অক্ষুন্ন থাকে। সংরক্ষিত বিটরুট দিয়ে আপনি সারা বছর সালাদ, সুপ, কেক, ব্রেড বিভিন্ন ধরনের খাবারের সাথে ব্যবহার করতে পারবেন। 

উপসংহারঃ বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা

বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। আপনারা এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন বিটরুট আপনাদের শরীরের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আপনি বিটরুট যেভাবেই খান না কেন সেভাবেই আপনার শরীরে কাজ করবে। একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য তার খাদ্য তালিকায় বিটরুট রাখা অত্যন্ত জরুরী। এতে করে মা ও শিশু দুজনেরই ভালো থাকার সম্ভাবনা থাকে।

আবার রূপচর্চার ক্ষেত্রেও বিটরুটের অংশ কোন দিকে কম নয়। সুন্দর ত্বকের জন্য বিদ্যুতের ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও শিশুদের জন্য রয়েছে অনেক উপকারিতা। সারা বছর পাওয়া যায় না বলে আপনি ঘরোয়া কিছু উপায়ে বিটরুট সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন এতে করে সারা বছরই খাওয়ার সুযোগ থাকবে। আবার যাদের পেটের সমস্যা আছে তারা চাইলে বিটরুট খেতে পারে এতে করে তাদের পেটের গন্ডগোলের সমস্যা দূর হবে।  
আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি বিটরুটের সত্যিই অনেক ভালো দিক রয়েছে। আপনি যদি সঠিক উপায়ে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনারও অনেক উপকার হবে। আমার আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে বা কোন উপকারে আসে তাহলে দয়া করে আপনার বন্ধুদেরকে শেয়ার করুন এবং শিখতে চাই ব্লগ ওয়েবসাইট এর সাথে থাকুন পরবর্তী আপডেট পাওয়ার জন্য। আমার লেখার মধ্যে কোন ভুল ত্রুটি হলে দয়া করে মাফ করবেন ধন্যবাদ। 
 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url