পাথর কুচি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে ১০ টি টিপস জানুন

প্রাচীন কাল থেকে মহাঔষধি গাছ হিসেবে কাজ করে আসছে এই গুণসম্পন্ন পাথরকুচি পাতা। এই গাছের সাইজ দুই থেকে তিন ফুট হয়ে থাকে। কিন্তু এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করনে ভূমিকা রাখে। আজকের আর্টিকেলে থাকবে পাথরকুচি পাতার কি উপকারিতা রয়েছে। 

পাথর কুচি পাতার উপকারিতা

সাথে থাকবে অপকারিতা এবং এর কি কি গুনাগুন রয়েছে সবকিছু তুলে ধরা হবে। তাই পাথরকুচি পাতার বিষয়ে সম্পূর্ণ জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে আর্টিকেলটি পড়তে হবে। তাহলে চলুন এবার শুরু করা যাক।

সূচিপত্রঃ পাথর কুচি পাতার উপকারিতা 

পাথর কুচি পাতার উপকারিতা 

পাথরকুচি পাতার উপকার সেই প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক রোগের নিরাময়ের জন্য পাথরকুচি পাতা দিয়ে সমাধান দিয়ে থাকে। আপনারা অনেকেই আছেন যারা শুধু লোকমুখে পাথরকুচি পাতার গুনাগুনের কথাই শুনে এসেছেন। 
কিন্তু নিজে কখনো ব্যবহার করে দেখেননি। তাদের জন্য বলছি এখন থেকে আপনার এই সমস্যা দূর করেনে অবশ্যই পাথরকুচি পাতার ব্যবহার করবেন। তাহলে জেনে নিন যে কি কি সমস্যা হলে পাথরকুচি পাতার রস খাবেন।
  • জন্ডিসের সমস্যা দূর করে
  • পেট ফাঁপা দূর করতে
  • কিডনির পাথর দূর করতে
  • শিশুদের পেট ব্যথা দূর করে
  • পাইলসের সমস্যা দূর করে
  • রক্ত পরিষ্কার করে
  • মাথা ব্যথা দূর করে
  • ব্লাড প্রেসার দূর করে 
  • মৃগী রোগের সমস্যা দূর করে
  • ঘা ও ক্ষত নিরাময় করে
  • ডায়রিয়া দূর করে
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
  • ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করে

পাথর কুচি পাতার ক্ষতিকর দিক গুল জানুন

কথায় আছে প্রত্যেকটা ভালো জিনিসের পিছনে আবার মন্দ জিনিসও লুকিয়ে থাকে। ঠিক তেমনি পাথরকুচি পাতার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আর এই ক্ষতিটা তখনই দেখা যায় যখন আপনি স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত খেতে থাকবেন এবং এটি দীর্ঘমেয়াদি চলতে থাকবে।আপনার সমস্যা দূর করনে অবশ্যই এটি ব্যবহার করুন। 

কিন্তু যখন আপনি ফলাফল পেয়ে যাবেন অর্থাৎ আপনার সমস্যার দূর হয়ে যাবে তখন চেষ্টা করবেন এটা আর না খাওয়ার যেহেতু এই ভেষজ উপাদানের কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে সেহেতু অবশ্যই আমাদের বুঝে শুনে খেতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই যে এই পাথরকুচি পাতার আবার কি কি ক্ষতিকর দিক রয়েছে। চলন শুরু করা যাক।
  • লিভারের সমস্যাঃ অবশ্যই আমরা লিভার ভালো রাখার জন্য পাথরকুচি পাতা খেয়ে থাকি। কিন্তু এই খাওয়াটা যদি দীর্ঘ মেয়াদী এবং অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে আমাদের লিভারের সমস্যা দেখা দিবে।
  • এলার্জির সমস্যাঃ যাদের শরীরে অতিরিক্ত এলার্জি রয়েছে তারা পাথরকুচি পাতা খাওয়া থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন। কারণ এর সাইড ইফেক্ট হিসেবে আপনার শরীরে বিভিন্ন ফুসকুড়ি লালচে লালচে ভাব দেখা দিতে পারে।
  • গর্ভ অবস্থায় সমস্যাঃ আপনাকে মনে রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় আপনি যদি পাথরকুচি পাতার রস খান তাহলে আপনার গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকবে এছাড়াও গর্ভবতী মহিলাদের হরমোনাল সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • মুত্রাশয়ে সমস্যাঃ পাথরকুচি পাতা অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে আপনার প্রসাবের রাস্তায় অনেক ধরনের প্রদান তৈরি করতে পারে যা আপনি সমস্যায় ভুগতে পারেন।
  • ডায়াবেটিসের সমস্যাঃ পাথরকুচি পাতার মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা কম থাকে। ডায়াবেটিসের জন্য এটা কিছুটা ভালো কিন্তু যদি আপনি অতিরিক্ত ব্যবহার করেন সেই ফলে আপনার গ্লুকোজের মাত্রা একদমই কমে যাবে এবং আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন।
  • বমির সমস্যাঃ অনেকেই আছেন যারা পাতা খাওয়ার সময় একটা গন্ধ অনুভব করেন এবং যে গন্ধ তার কারণে এই পাতার রস খাওয়ার সময় বমি হতে পারে।
  • ঔষধ খেতে সমস্যাঃ আমরা অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ওষুধের সাথে এই পাথরকুচি পাতার রস মিশিয়ে সেবন করে থাকে এটা কিন্তু কখনোই উচিত নয় কারণ এর কিছু প্রতিক্রিয়া ও বিক্রিয়া রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য বিষের মতো কাজ করে।
  • ডায়রিয়ার সমস্যাঃ আমরা যারা কোন সমস্যার সমাধানে অতিরিক্ত পাথরকুচি পাতার রস খেয়ে থাকি তাদের মধ্যে অনেকেরই ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ক্ষুধামান্দার সমস্যাঃ অতিরিক্ত পাথর প্রতি পাতার রস খাওয়ার ফলে আমাদের ক্ষুধা মন্দা দেখা দিতে পারে এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

পাথর কুচি পাতা খাওয়ার নিয়ম 

পাথরকুচি পাতার খাওয়ার অনেক ধরনের একটি নিয়ম রয়েছে। তার মধ্যে বেসিক কিছু নিয়ম বলে দেবো যে ভাবে খেলে আপনি সমাধান পেয়ে যাবেন। প্রথমত পাথরকুচি পাতা খাওয়ার নিয়ম হলো পাতার রস করে হালকা একটু কুসুম গরম পানি দিয়ে তার মধ্যে এক চামচ মধু অথবা চিনি মিশিয়ে খেতে পারেন। যারা শুধুমাত্র খেতে পারবেন না তাদের জন্য এই নিয়ম।
এরপরে আপনি চাইলে পাথরকুচি পাতাকে ভর্তা বানিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনি সুস্বাদু একটি তরকারি হিসেবে ভাতের পেলেটে পেয়ে গেলেন পাথরকুচি পাতা সাথে পেয়ে যাবেন আপনার সমস্যার সমাধান। এখন অবশ্যই আপনার মনে হচ্ছে যে পাথরকুচি পাতা আবার কিভাবে ভর্তা করে খায়। তাহলে চলুন কিভাবে ভর্তা করে এবং কোন অকারণ লাগে সেটা শেয়ার করি।

ভর্তা উপকরণঃ
  • আপনার প্রয়োজন মত পাথরকুচি পাতা
  • সাথে নিবেন ধনেপাতা
  • দুইটি পেঁয়াজ করছি
  • পরিমাণ মতো কাঁচামরিচ কুচি
  • দুইটি শুকনো মরিচ ভাজি
  • কয়েকটি রসুন ভাজি
  • পরিমাণ মত লবণ
  • সাথে থাকবে সরিষার তেল
রেসিপি তৈরিঃ প্রথমে আপনি পাথরকুচি পাতা এবং ধনিয়াপাতা ভালোমতো ধুয়ে নিবেন। এরপরে এরপরে সবগুলো উপাদান একসাথে কড়াইয়ের উপর দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকবেন যখন এগুলো ব্রাউন কালার হয়ে যাবে তখন এর মধ্যে পাথরকুচি পাতা এবং ধনিয়াপাতা দিবেন। তারপরে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে নামিয়ে নিবেন এতে করে হয়ে যাবে আপনার পাথরকুচি পাতার ভর্তা। যারা খুব সহজে পাথরকুচি পাতার রস খেতে পারেন না তাদের জন্য এই উপায়টি অনেক ভালো। 

চুলের যত্নে পাথর কুচির পাতার ব্যবহার 

ছেলে মেয়ে সকলের কাছে সৌন্দর্যের একটি জায়গা হল তার মাথার চুল। এরকম মানুষ কমই আছেন যারা চুল পছন্দ করেন না। কিন্তু আজকাল দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ মানুষেরই সমস্যা উঠে মাথা টাক হয়ে যাচ্ছে। তাই অনেকেই বাজার থেকে কেমিক্যাল ও রাসায়নিক যুক্ত বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকে।
পাথর কুচি পাতার উপকারিতা
এতে করে আমাদের সাময়িকভাবে উপকার দেখা দিলেও কিছুদিন পরে সমস্যা আবার শুরু হয়।দেখা যায় চুল পড়ার সমস্যা চুলের আগা ফাটার সমস্যা ইত্যাদি ধরনের সমস্যা লেগেই থাকে। তাই চলুন দীর্ঘমেয়াদীভাবে এই সমস্যা থেকে কিভাবে বাঁচবেন সেটার একটু আলোচনা করি। পাথরকুচি পাতার রস ব্যবহারে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে। নিচে আলোচনা করা হলো।
  • চুল পড়া বন্ধ করেঃ পাথরকুচি পাতার রস সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন আমাদের চুলে ব্যবহার করলে চুল পড়া রোধ করবে।
  • স্বাস্থ্য ঠিক থাকেঃ পাথরকুচি পাতা শুধু চুল পড়ায় বন্ধ করে না পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে।
  • ত্বক ভালো রাখেঃ পাথরকুচি পাতার রস ব্যবহারের ফলে আমাদের মাথার ত্বক বিভিন্ন খারাপ ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করে।
  • খুশকি দূর করেঃ অনেকের মাথায় এটা কমন সমস্যা। খুশকি যেতেই চায়না তাই খুশকি দূর করার জন্য সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন পাথরকুচির রস ব্যবহার করুন।
  • নতুন চুল গজাবেঃ চুল পড়া বন্ধ করার পাশাপাশি নতুন চুল গজাবে এবং এই চুল হবে স্বাস্থ্য উপযোগী।
  • আগা ফাটা দূর হবেঃ অনেক মানুষের মাথায় চুল আছে কিন্তু আগা ফেটে দুটো করে হয়ে গেছে। এতে করে দেখা যায় চিরুনি করার সময় চুল ভেঙে ভেঙে পড়ছে। তাই এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পাথরকুচির রস ব্যবহার করা শুরু করুন। 

পাথর কুচি পাতার গাছ লাগানোর সহজ উপায় 

নানা ধরনের গুণসম্পন্ন ভেষজ উপাদান হল এই পাথরকুচি পাতা। প্রাচীনকাল থেকে এই পাতার বেশ ব্যবহার হয়ে আসছে। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন পাথরকুচি পাতার গাছ লাগানো কতটা সহজ।আবার যারা জানেন না তারা জানলে অবাক হবেন। পাথরকুচি পাতা মূলত বছরের যে কোন সময়ে লাগানো যায়। পাথরকুচি পাতা একটি উদ্ভিদ। 

পাথরকুচি পাতার প্রজনন বৃদ্ধি করবেন যেভাবে প্রথমে কয়েকটি পোক্ত পাতা ছেড়ার পরে কাদাযুক্ত মাটিতে রেখে দিন আর কোন কাজ করতে হবে না।এরপরে কয়েক দিন পার হয়ে গেলে দেখবেন ওই পাতার চারদিক দিয়ে ঘাস কাটার মত বের হয়েছে। এবং অসংখ্য বীজ ওখান থেকে বের হবে। দেখতে অনেকটা কচুরিপানার বীজের মত। 

আর এই গাছ প্রায় দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতা হয়ে থাকে এবং এর পাতা গোলাকার ডিম্বানুর মত হয়। পাতার চারদিক দিয়ে কাটাযুক্ত থাকে। এ তেমন কোনো ডালপালা হয় না শুধু গাছের সাথে পাতা বের হয়। তাই আপনি চাইলে খুব সহজে পাথরকুচি পাতার প্রজনন বাড়াতে পারেন। এবং এ প্রজননটা যে কোন জায়গাতেই করতে পারেন চাইলে তবে মধ্যে আবার মাটিতেও করা যাবে। 

খালি পেটে পাথর কুচি পাতা খেলে কি হয়

বহুল জনপ্রিয় এবং সমস্যা সমাধানের ব্যবহার হয়ে আসছে পাথরকুচি পাতার রস। আমরা বেশিরভাগ মানুষ এটিকে পাথরকুচি পাতা নামের চিনি। কিন্তু এটির বৈজ্ঞানিক নাম Kalanchoe Pinata নামেও পরিচিতি পেয়েছে। আপনারা অনেকেই জানতে চান যে খালি পেটে পাথরকুচি পাতার রস খেলে কি কি উপকার হতে পারে। পাথরকুচি পাতার রস যেভাবে খায় আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

আমাদের শরীরের বিভিন্ন সংক্রমণ হওয়া থেকে দূরে রাখে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীর থেকে বের করে আনে। যেসব ব্যাকটেরিয়ার কারণে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি এই সকল ব্যাকটেরিয়া বা বর্জ্য পদার্থ বের করে আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে পাথরকুচি পাতার রস। এই জন্য এই পাতাটি মহা ওষুধ হিসেবেও কাজ করে আসছে যুগের পর যুগ। তাহলে জেনে নেই যে খালি পেটে পাথর কুচি পাতা খাওয়ার ফলে কি কি উপকার হতে পারে।

  • পিত্তথলি ও কিডনিতে পাথরঃ যাদের শরীরে অনেক দিন ধরে এই রোগটি বাসা বেধেছে অর্থাৎ থলিতে পাথর অথবা কিডনিতে পাথর দেখা দিয়েছে তাদের জন্য এই উপাদানটি খুবই উপকারী। কেননা এই পাতার রস নিয়মিত করে সকালবেলা খালি পেটে খাওয়ার ফলে পিত্তথলিও কিডনিতে যে পাথর জমে সেগুলোকে গলিয়ে বের করে নিয়ে আসে। এতে করে সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • ছোট বাচ্চাদের সর্দি দূর করতেঃ অনেক ছোট বাচ্চা রয়েছে যাদের দীর্ঘদিন ধরে ঠান্ডা লেগে আছে অর্থাৎ সর্দি কাশি দেখা দিচ্ছে। কোনভাবেই ভালো হচ্ছে না। তাদের জন্য প্রতিদিন সকাল বেলায় খালি পেটে পাথরকুচির রসের সাথে একটু মধু মিশিয়ে খাওয়ানো উচিত এতে করে শিশুটির ঠান্ডা অথবা সর্দি কাশি দূর হয়ে যাবে।
  • ঘা ও ক্ষত দূর হয়ঃ মানুষের শরীরে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ঘা দেখা দিতে পারে এছাড়াও হুট করে শরীরের কোন অংশ কেটে গেলে বিখ্যাত দূর করার জন্য ইমার্জেন্সি ভাবে আদার কুচি পাতার রস সেখানে লাগিয়ে দেওয়া এবং খাওয়া এর ফলে ঘা ও ক্ষত দূর হয়ে যায়।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতেঃ অনেক মানুষের প্রচুর গ্যাস্ট্রিক হয়ে থাকে। যাদের সব সময় ওষুধের উপর থাকতেই হয় তারা চাইলে প্রতিদিন খালি পেটে একটু করে পাথরকুচির রস খাওয়ার অভ্যাস করতে এতে করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ অনেক মানুষ আছে যাদের হজম শক্তিতে সমস্যা হয়। এতে করে তাদের ক্ষুধামন্দা লেগেই থাকে খাওয়ার প্রতি অরুচি ভাব দেখা দেয়। এবং একসময় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হয়ে যায়। তাই এই সমস্যা দূর করতে পাথরকুচি পাতার রস খাওয়া উচিত। 

পেটের সমস্যা দূর করতে পাথর কুচি পাতা

পাথরকুচি পাতার রস আমাদের পেটের সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত ভূমিকা পালন করে। যাদের পেটে বিভিন্ন ধরনের ঘা হয়ে থাকে অর্থাৎ আলসারের ঘা এই ঘা দূর করার জন্য পাথরকুচি পাতার রস অত্যন্ত কার্যকরী। আবার অনেকের পেটে পাথর দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলে পাথরের শত্রু হলো পাথরকুচি পাতার রস। যা খাওয়ার ফলে পাথরকে গলিয়ে ভিতর থেকে বের করে নিয়ে আসে। 

এছাড়াও যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তাদের পাথরকুচি পাতার রস খাওয়ার ফলে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হবে সাথে করে খাওয়ার প্রতি রুচি ভাত ফিরে আসবে। অনেক মানুষ আছে যারা খাবার দেখলেই ভয় পায় এক কথায় তাদের খাবার প্রতি কোন রুচি তৈরি হয় না। এই মানুষগুলোর জন্য পাথরকুচি পাতার রস খাওয়া দরকার। এতে করে তার পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হবে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এর জন্য তার খাবারের প্রতি রুচি হবে। 
এরপরে আরেকটি বড় সমস্যা হল পাইলসের সমস্যা। যাদের পাইলসের সমস্যা আছে তারা চাইলে এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত পাথরকুচি পাতার রস খাওয়া। এবং এই সমস্যাগুলো যখন আপনাদের ঠিক হয়ে যাবে তখন অবশ্যই এই পাতার রস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তা না হলে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে আবার অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

শরীরে জমা পাথরের শত্রু হলো পাথরকুচি পাতা

আমরা বেশিরভাগ অসুস্থ হয়ে থাকি পরিমাণের তুলনায় কম পানি খাওয়ার কারণে। এর কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পাথর জমে যায়। এগুলা বেশিরভাগ সময়ই অপারেশন করতে হয়।এছাড়া আবার কিছু কিছু সময় ঔষধ এবং প্রাকৃতিক কিছু ভেষজ উপাদানের মাধ্যমে সারিয়ে তোলা যায়।তার মধ্যে একটু উপাদান হলো পাথরকুচি পাতা। 

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে শরীরে যে পাথর জন্ম নেয় তার শত্রু হিসেবে কাজ করে পাথরকুচি পাতা।পাথরকুচি পাতা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বেশ উপকারী।এই পাতা এতটাই শক্তিশালী যে শরীরের পাথর ০.৫ থেকে ২.৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত শরীরের পাথরকে গলিয়ে বের করে আনতে সক্ষম হয়। এই পাতাটি সাদা টক হওয়ার কারণে পাকস্থলী থেকে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থগুলো খুব সহজেই বের করে আনতে পারে।

যে ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে পাইলস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটে জমা ভিন্ন পাথরের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য পাথরকুচির পাতা খুব উপকারী হবে। এটা আমার কথা নয় বরং বিশেষজ্ঞদের কথা।বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে পাথরকুচি পাতার রস আমাদের শরীরের জন্য সত্যিই অনেক উপকারী। 

যে সব রোগের মহাওষুধ পাথর কুচি পাতা

পাথরকুচি পাতা অনেক আগে থেকেই আমাদের সকলের কাছে খুবই পরিচিত। এবং এর পাতা গ্রামে গঞ্জে শহরে সকল জায়গাতেই পাওয়া যায়। এর প্রজনন বৃদ্ধি করাও অনেক সহজ। এই পাতার এতটাই গুণ রয়েছে যে কিছু কিছু রোগের জন্য মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে থাকে। এই পাতা জন্মানোর জন্য তেমন কোন বিশেষ মাটির প্রয়োজন পড়ে না। 

ভেজা এবং স্যাতসেতে মাটি হলেই সেখানে পাতা ফেলে রাখলেই এর কাজ বের হয় এর জন্য আলাদা করে কোন পরিচর্যার দরকার পড়ে না। যেহেতু এই গাছটির জন্মানোটাও খুব সোজা কোন কষ্ট বা অর্থ খরচ হয় না এবং এর ঔষধি গুনাগুনটা অনেক বেশি তাই সকলেরই উচিত শরীরের সংক্রমণ ঠেকাতে এই পাতা খাওয়ার অভ্যাস করা। তাহলে জেনে নেই কোন রোগের মহা ঔষধ হিসেবে পাথরকুচি পাতা করে থাকে।
  • বিষাক্ত কোন পোকামাকড় শরীরের কোন অংশে কামড়ালে এই পাতা আগুনে সেকে সেখানে লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়। 
  • শিশুদের পেট ব্যথা সমস্যার সমাধানে পাথরকুচি পাতার রস ভালো কাজ করে।
  • শরীরের জ্বালাপোড়া দূর করতে এই পাতা কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • ঠান্ডা জনিত অর্থাৎ সর্দি কাশি দূর করতে এই পাতার রস খেলে স্বস্তি পাওয়া যায়।
  • যাদের শরীরে মৃগী নামক রোগটি রয়েছে তাদের যখন এই সমস্যা দেখা দিবে তখন এই পাতার রস খাওয়াতে হবে।
  • ত্বকের যত্নে খুব ভালো কাজ করে থাকে পাথরকুচি পাতার রস।

উপসংহারঃ পাথর কুচি পাতার উপকারিতা 

পাথরকুচি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা হয়তো এতক্ষণে বুঝে গেছেন যে এটা আপনার আমার শরীরের জন্য কতটা উপকারী। আপনারা যারা আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েছেন তারা এতক্ষণে জেনেছেন যে এই পাথরকুচি পাতার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা যেমন পেটের ব্যথা, কিডনিতে পাথর জমা, চুল চুল পড়া বন্ধ করতে এছাড়া পাথরকুচি পাতা কিভাবে খেতে হবে এবং খালি পেটে খেলে কি উপকার পাওয়া যাবে সে সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

এরপরেও যদি আপনাদের কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হয় বা কোন সমস্যার সমাধান প্রয়োজন পড়ে যেটা আমার আর্টিকেলটির মধ্যে লেখা নেই তাহলে অবশ্যই মন্তব্য করবেন এবং যোগাযোগ করে সমস্যাটি শেয়ার করবেন আমি আপনার সমস্যাটি সমাধানের জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করব। আর লেখাটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url