মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ ও দূরীকরণের বিষয়ে বিস্তারিত জানুন

   

মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ ও দূরীকরণের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলটি আপনাকে মনোযোগ দিয়ে সম্পন্ন করতে হবে। মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব বলতে মূলত যেটা বুঝি দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত যোনিপথে যৌন মিলন করার পরেও যে নারী গর্ভধারণ করতে পারে না তাকেই মূলত বন্ধ্যাত্ব বুঝায়।নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

মেয়েদের-বন্ধ্যাত্বের-কারণ-জানুন

মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব দূর করতে বর্তমানে অনেক ধরনের চিকিৎসা বের হয়েছে যার পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসার ফলে বন্ধ্যাত্ব দূর করা সম্ভব হচ্ছে এবং অনেকেই গর্ভধারণ লাভ করছে। আজকের আর্টিকেলে মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের পাশাপাশি পুরুষেরও যে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে এ সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

সূচিপত্রঃ মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ জানুন 

মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ জানুন 

বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বের মধ্যে নারীদের মধ্যে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে এই বন্ধ্যাত্বের সমস্যা। যার ফলে অনেক নারীরা মানসিক চাপে চলে যাচ্ছে এমনকি পরিবারের মধ্যে ও বিভিন্ন অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ এটাকে অনেক জটিল হিসেবে দেখা হয় কারণ যখন একটি নারী দীর্ঘ সময় ধরে যৌন মিলন করার পরেও সন্তান গর্ভধারণ করতে পারে না তখনই সেই নারীকে বন্ধা বলা হয়।


তবে বর্তমানে আধুনিক বিশ্বের সময়ে এমন অনেক চিকিৎসা রয়েছে যার ফলে এই অসম্ভবকেও অনেক নারী সম্ভব করে ফেলছে। সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়ম মেনে চলার কারণে অনেকেই এই বন্ধুত্ব থেকে বের হতে পারছে। তবে আমাদের আগে জানতে হবে যে মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব কেন হয়। বঅবশ্যই কিছু কারণ রয়েছে যার ফলে বন্ধ্যাত্ব  নামক সমস্যাটি দেখা দেয়। তাহলে চলুন মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ।  
  • যে সকল মেয়েদের পিরিয়ডের সময় অস্বাভাবিকভাবে পেটের ব্যথা করে তাদের বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
  • যে সকল মেয়েদের বয়সের তুলনায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পায় তাদের ক্ষেত্রেও বন্ধ্যাত্বের মত সমস্যা হতে পারে।
  • আবার যে সকল মেয়েদের বয়সের তুলনায় ওজন অনেক কম থাকে এদেরও বন্ধ্যাত্বেরমতো সমস্যা হয়ে থাকে।
  • যে মেয়েরা অ্যালকোহল জাতীয় বা অতিরিক্ত ধূমপান করে থাকে তাদের বেলায়ও বন্ধ্যাত্বের সমস্যা হয়।
  • অনিয়মিত ডিম্বস্ফোটন
  • ফেলোপিয়ান টিউবের ক্ষতি
  • জরায়ু ফাইব্রয়েডস
  • গনোরিয়া বা অন্যান্য যৌন রোগ থাকলে
  • পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম
  • হরমোন জনিত সমস্যা
এই সকল সমস্যা গুলো যে নারী বা মহিলার মধ্যে পাওয়া যাবে তার বন্ধ্যাত্বের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই রয়েছে। বন্ধ্যাত্বের শিকার হয় মূলত মহিলাদের বয়স যখন ৩৫ প্লাস হয়ে যায় তখনই বোঝা যায়। কারণ এই সময়টাতে মহিলাদের গর্ভধারণের ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। তবে বর্তমান সময়ে এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই অবশ্যই এর ভালো চিকিৎসার ফলে গর্ভধারণ করা সম্ভব। 

মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ দেখুন

খুব স্বাভাবিকভাবে মেয়েদের বন্ধত্বের লক্ষণ হিসেবে আমরা বুঝে থাকি যখন একটি মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় এবং অনেক দিন ধরে বাচ্চা নেওয়ার ইচ্ছা থাকার পরেও গর্ভধারণ করতে পারে না তখনই ধরে নেওয়া হয় মেয়েটি বন্ধ্যা। কারণ বিয়ের পর স্বাভাবিকভাবে বেশিরভাগ দম্পতিরায় চিকিৎসা ছাড়াই বাচ্চা নিতে পারে।  এর জন্য তেমন কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না। 

কিন্তু যখন আপনি স্বাভাবিক নিয়মেই যৌন মিলন করার পরেও গর্ভধারণ করতে পারছেন না তখনই বুঝে নিবেন আপনার বন্ধ্যাত্বের সমস্যা রয়েছে। আর এক বছর ধরে দেখার পরেও যখন আশানুরুপ কোন ফল পাওয়া যাবে না তখন আর দেরি না করে একজন গাইনোলজিস্ট ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই যে বন্ধ্যাত্বের কি কি লক্ষণ রয়েছে।
  • মহিলাদের বয়স যদি ৩৫ এর বেশি হয় সেক্ষেত্রে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
  • ছয় মাস থেকে এক বছর ধরে যদি বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু এর পরেও গর্ভধারণ হচ্ছে না।
  •  তাহলে বুঝে নিবেন বন্ধ্যাত্বের সমস্যা রয়েছে।
  • পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত পরিমাণে পেটের ব্যথা বা বেদনাদায়ক যন্ত্রণা হলে।
  • মেয়েদের যখন অনিয়মিত মাসিক হতে থাকে।
  • কিছু মেয়েরা আছে যাদের একাধিকবার গর্ভপাত হয়েছে।
  • যে মেয়েদের শরীরে ক্যান্সার নামক মরণব্যাধি বাসা বেধেছে এবং যার ফলে চিকিৎসা নেওয়া হয়েছে।
  • পেলভিক প্রদাহ জনিত রোগের মতো অবস্থার সৃষ্টি হলে।
  • মেয়েদের সহবাসের সময়ে অতিরিক্ত ব্যথা অনুভব করা।
  • কোন মেয়ের শরীরে যদি দীর্ঘস্থায়ী কোনো অসুখ বাসা বেঁধে থাকে।

এই লক্ষণগুলো যখন আপনার শরীরের মধ্যে দেখা যাবে তখন বুঝে নিবেন আপনিও বন্ধ্যাত্বের শিকার হতে যাচ্ছেন। তাই বেশি দেরি না করে অবশ্যই একজন ভাল ডাক্তারের চিকিৎসা নিবেন যেন অল্পতেই সুস্থ হয়ে যেতে পারেন। 

বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়

বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রাকৃতিকভাবে কয়েকটি নিয়ম বলবো যা মেনে চললে আপনিও এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন খুবই সহজে। তবে যদি আপনার সমস্যাটা বেশি জটিল হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ডাক্তারি পরামর্শের পাশাপাশি এই উপায়গুলো মেনে চলবেন এতে করে আপনার সমস্যা দূর হবে এবং গর্ভধারণ তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক উপায় গুলো।
  • সঠিক খাদ্যাভ্যাসঃ নারী-পুরুষ সকলেরই জীবন চলার জন্য অবশ্যই পুষ্টিকর এবং মানসম্মত খাবার খাওয়া উচিত। আমাদের শরীরে নানা ধরনের সমস্যা লেগে থাকে। তাই এমন কিছু খাবার খাওয়া উচিত যেন শরীরের ঘাটতি পূরণ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় যার ফলশ্রুতিতে বন্ধ্যাত্ব নামক রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
মেয়েদের-বন্ধ্যাত্বের-কারণ-জানুন
  • পরিমাণ মতো পানি পান করাঃ পানির অপর নাম জীবন। কথাটা আমরা সকলেই জানি যে সকল রোগের ঔষধ হিসেবে প্রথমে বেছে নেওয়া হয় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাকে। ডাক্তাররাও রোগীকে সবসময় পরামর্শ দিয়ে থাকে অবশ্যই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা। এতে করে আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি থাকে।
  • ক্ষতিকার উপাদান বর্জন করাঃ আপনি যদি বন্ধ্যাত্বের মতো রোগ থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ক্ষতিকর উপাদানগুলোকে বর্জন করতে হবে। বিশেষ করে যে সকল উপাদান আপনার শরীরের জন্য ক্ষতি করে সেগুলো ত্যাগ করতে হবে। যেমন ধূমপান করা থেকে অবশ্যই নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করাঃ আমরা সকলেই জানি নিয়মিত ব্যায়াম করা আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সহজে খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলো আমাদের শরীরকে আক্রান্ত করতে পারে না। তাই বন্ধ্যাত্ব থেকে বেঁচে থাকার জন্য আপনার শরীর চর্চার দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত।
  • দাম্পত্যে আস্থা ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখাঃ সাধারণত মেয়েদের যখন মাসিক চলে তখন এই সময়টাতে কোনভাবেই সহবাস করা উচিত নয়। কারণ এতে করে মেয়েদের জরায়ুতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই সকল নারী ও পুরুষের অবশ্যই এই দিকে খেয়াল রাখা উচিত।
  • জীবনযাত্রার পরিবর্তনঃ আপনাকে অবশ্যই জীবন যাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে তাড়াতাড়ি রাতে ঘুমাতে যেতে হবে এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে। এর পাশাপাশি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। তাহলে আপনার শরীর এবং মন দুটোই ভালো থাকার সম্ভাবনা থাকবে।
  • আত্মবিশ্বাসী হওয়াঃ আপনি যদি মানসিকভাবে বা নিজের উপরে আত্মবিশ্বাসী না হন তাহলে প্রাকৃতিকভাবে বন্ধ্যাত্ব দূর করতে পারবেন না। তাই সবার আগে আপনার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসী হতে হবে এবং মানসিকভাবে ঠিক থাকার চেষ্টা করতে হবে। কারণ অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মানসিক চাপও হতে পারে আপনার বন্ধ্যাত্বের কারণ।

পুরুষের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ ও দূরীকরণ

পুরুষের বন্ধ্যাত্ব তো বলতে বোঝায় পুরুষের শুক্রাণু দিয়েই মূলত ভ্রুন গঠন হয়। আর সেই শুক্রাণু যদি কোন ভাবে ফিমেল জেনিটাল ট্র্যাক্ট যা নারীর যৌনাঙ্গ পৌছাতে অক্ষম হয়ে থাকে তাহলে ধরে নেওয়া হয় যে সেখানে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব রয়েছে। কিন্তু আমাদের সমাজে যখন কোন দম্পত্তির বাচ্চা হয় না খুব সহজেই ধরে নেওয়া হয় যে মনে হয় নারীর সমস্যা। 
এটা একটি কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই নয় বর্তমান বিজ্ঞানের যুগে অনেক আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে যার ফলে গবেষণায় দেখা গেছে যে নারীর পাশাপাশি পুরুষেরও বন্ধ্যাত্বের অনেক কারণ রয়েছে। মোটকথা বন্ধ্যাত্ত নারীর হোক বা পুরুষের উভয়েরই ভালো চিকিৎসার ফলে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। তাহলে চলুন পুরুষের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ ও দূরীকরণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। 
  • শুক্রাণু তৈরি হতে চায় না।
  • শুক্রাণু তৈরি হচ্ছে কিন্তু পরিমাণে অনেক কম।
  • শুক্রানুর পরিমাণ ঠিক আছে কিন্তু গতিশীলতা ঠিক নেই।
  • শুক্রাণুর আকৃতিগত কোন সমস্যা যদি থাকে।
  • শুক্রাণু তৈরি হচ্ছে কিন্তু সহবাস করার সময় নারীর যৌনাঙ্গে সেটা পৌঁছাতে অক্ষম হচ্ছে।
এবার জানব পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণে কি কি উপায় রয়েছে। এবং যা মেনে চলার ফলে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব রয়েছে।
  • যদি কোন পুরুষের শরীরে হরমোনের সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই হরমোন বিশেষজ্ঞ একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে যেন হরমনের ঘাটতি পূরণ হয়।
  • একজন পুরুষ যদি দীর্ঘ সময় ধরে অনেক গরমের মধ্যে কাজ করে তাহলে তাকে কিছু সময়ের জন্য ঠান্ডা জায়গাতে দিয়েছিলাম নিতে হবে। এবং সময় সুযোগ বুঝে তার পেশা পরিবর্তন করতে হবে।
  • যারা কৃষি কাজ করে থাকে দেখা যায় জমিতে সারবা কীটনাশক দেওয়ার সময় সেখান থেকে কিছু সাইড ইফেক্ট পড়ে শরীরের উপর যার ফলশ্রুতিতে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • পুরুষকে অবশ্যই ধূমপান পরিহার করতে হবে। কারণ অধিক সময় ধূমপানের কারণেও পুরুষের বন্ধ্যাত্ব হয়ে থাকে।
  • পুরুষকে খাবার খাওয়ার সময় অবশ্যই কীটনাশক যুক্ত খাবার পরিহার করে অর্গানিক বা প্রাকৃতিক খাবার খেতে হবে।
  • পুরুষ যদি এমন কোন ওষুধ খেয়ে থাকে যার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা হয়েছে তাহলে সেই ঔষধ পরিহার করতে হবে।
  • যে পুরুষের ক্যান্সার নামক রোগটি হয়েছে তার কেমোথেরাপি নেওয়ার পূর্বে শুক্রানু সংরক্ষণ করে রাখতে পারে।
  • শুক্রাণু তৈরি হচ্ছে কিন্তু বের হওয়ার রাস্তা পাচ্ছে না এতে করে বের হওয়ার নালিকের সার্জারি করে দিতে হবে।

বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধে কোন হরমোন প্রয়োজন

বর্তমান বিজ্ঞানের সময়ে এসে সকলেই প্রতিষ্ঠিত না হয়ে বিয়ে করতে চায় না। দেখা যায় যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করতে গেলে একজন মেয়ের বয়স ৩০ এর উপরে চলে যায়। এর কারণে তারা যখন সন্তান ধারণ করতে চাচ্ছে তাদের এই সমস্যাটা ব্যাপক আকারে ধারণ করছে। সহজে বাচ্চা গর্ভধারণ করা হচ্ছে না বা অনেকেই বন্ধ্যাত্বের শিকার হচ্ছেন। বর্তমান সময়ে এটা জটিল আকারে ধারণ করেছে।

বলা হয়েছে বেশি বয়সী নারীদের বাচ্চা ধারণ করার ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায় যার ফলে তার আশা নিরাশাই হয়ে থাকে। এছাড়া আইভিএফ চিকিৎসা রয়েছে যা সকলের জন্য প্রযোজ্য নয় কারণ এই চিকিৎসাটি অতিমাত্রায় টাকার প্রয়োজন পড়ে না যা সকলের পক্ষে এই চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয় না।

তবে বর্তমান সময়ে গবেষকরা এই সকল নারীদের জন্য একটু আশার আলো দেখাচ্ছে। মূলত নারীদের যখন বয়স বেশি হয়ে যায় ডিহাইড্রোপিয়ানড্রস্টারন নামক এক ধরনের হরমোন যা অনেক তাই ঝরে যায়। ডিহাইড্রোপিয়ানড্রস্টারন হরমোন বলতে মূলত সেক্স হরমোনকে বুঝায়। একটা বয়সের পর মেয়েদের এই হরমোন কমে যাওয়ার ফলে তারা সন্তান গর্ভধারণ করতে পারে না। 

এর জন্য বর্তমানে গবেষকরা একটি পিল আকারে ঔষধ তৈরি করেছে যা খাওয়ার ফলে মেয়েদের শরীরে এই হরমোনের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমান সময়ে মহিলারা ৪০ বছর বয়সে গিয়েও ফোন করতে পারছে। 

বন্ধ্যাত্বের জন্য যে চিকিৎসা গুলো রয়েছে

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের কিছু মানুষ পেশাগত কারণে সন্তান নিতে অনেকটাই দেরি করে ফেলে। কিন্তু একটা সময় পর আর সন্তান ধারণের ক্ষমতা অনেকেরই থাকে না। বিশেষ করে যাদের বয়স ৩০ এর উপরে চলে যায় এবং বাচ্চা নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে কিন্তু দেখা যায় যে সন্তান নেওয়ার জন্য এক বছর হয়ে গেল তারা যৌন মিলন করছে কিন্তু তারপরেও গর্ভধারণ হচ্ছে না তাহলে বোঝা যাবে তাদের সমস্যা রয়েছে। তাই তৎক্ষণাৎ একজন ভালো গাইনি ডাক্তারের চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

বিশেষ করে যে দম্পত্তির বয়স ৩০ এর উপরে তাদের উচিত বিয়ে করার পরপরই বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করা এতে করে যদি ছয় মাসের মধ্যে বাচ্চা না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আমাদের বাংলাদেশে বর্তমানে বন্ধ্যাত্ব দূর করার জন্য অনেক গবেষণা চলছে অর্থাৎ এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কি করনীয় সেগুলো নিয়ে গবেষকরা আলোচনা করেই চলছে। তাহলে চলুন আমরা দেখে নেই বন্ধ্যাত্ব দূর করার জন্য কি কি চিকিৎসা রয়েছে।
  • মেয়েদের খাদ্য অভ্যাস ঠিক করতে হবে।
  • ছেলেদেরও খাদ্য অভ্যাস ঠিক করতে হবে।
  • মেয়েদের উচিত ঘরোয়া রান্নার খাবার খাওয়া।
  • নিয়মিত নারী ও পুরুষের ব্যায়াম করা।
  • ক্যালরিযুক্ত খাবার একটু কম খাওয়া।
  • অবশ্যই সঠিক বয়সে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করা।
  • রুটিন মেনে চলা যেমন সঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া।
  • শরীরের ওজন যেন অতিরিক্ত বেশি এবং কম হয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা।
  • যে নারীদের ডিম্বানু তৈরিতে সমস্যা তাদের জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করা।
  • সন্তান জন্মদানে যদি পুরুষ অক্ষম থাকে সে ক্ষেত্রে টেস্ট টিউবের মাধ্যমে সন্তান ধারণ করতে করা।
  • পুরুষের বন্ধ্যাত্ব থাকলে ওষুধের মাধ্যমে শুক্রাণু বাড়ানো যেতে পারে।

বন্ধ্যাত্ব বলতে মূলত কি বুঝায়

চলুন এবার একটু জেনে নেই যে বন্ধ্যাত্ব বলতে মূলত আমরা কি বুঝে থাকি। ডাক্তারি ভাষায় বন্ধ্যাত্ব বলতে বুঝায় যে নারী এবং পুরুষ বাচ্চা নেওয়ার ইচ্ছা পোষণের পর এক বছর ধরে যৌন মিলন করার পরেও যখন বাচ্চা নিতে সক্ষম হয় না বা গর্ভধারণ হয় না তাকে মূলত বন্ধ্যাত্ব বোঝায়। বন্ধ্যাত্ব কিন্তু দুই ধরনের রয়েছে প্রথম হলো যে কখনই সন্তানের মা হতে পারেনি দ্বিতীয় হল অনেকেই এক সন্তান হওয়ার পরে আর গর্ভধারণ করতে পারে না। 

কিন্তু আমাদের সমাজে বন্ধ্যাত্ব বলতে প্রথমটাকেই বেছে নেওয়া হয়। আমাদের সমাজে আরও একটি কুসংস্কার রয়েছে যখনই কোন দম্পতির বাচ্চা হয় না ধরে নেওয়া হয় যে সেই মেয়ের সমস্যা কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে পুরুষেরও বন্ধ্যাত্বর সমস্যা হয়ে থাকে। গবেষকদের মতে বন্ধ্যাত্বের ক্ষেত্রে নারীদের অবস্থান ৪০% আবার পুরুষের অবস্থান ও ৪০% তাহলে সে ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যায় সন্তান গর্ভধারণ না করার পিছনে নারী ও পুরুষ উভয়েরই সমস্যা হতে পারে। 

বর্তমান সময়ে এই বন্ধ্যাত্ব তৈরি করনে অনেক গবেষণা বা রিসার্চ চলছে। গবেষণা থেকে এমন কিছু উঠে এসেছে যা থেকে চিকিৎসার ফলে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। তাই আপনাদের যদি এই বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ থেকে থাকে দ্রুত একজন গাইনোলজিস্ট ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এতে করে অল্পতেই আপনিও সমস্যার সমাধান খুঁজে পাবেন। 

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণেও হতে পারে আপনার বন্ধ্যাত্ব

মানুষের জীবন চলার পথে চিন্তা হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই চিন্তাকে যদি আপনি দুশ্চিন্তায় রূপ দেন তাহলে আপনিও বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারেন। তার মধ্যে রয়েছে বন্ধ্যাত্বের কারণ। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা এবং চাপের কারণে মানুষ যখন স্ট্রেস চলে যায় তখন সে গর্ভধারণ করতে অক্ষম হয়। এবার অনেকেরই মনে হতে পারে দুশ্চিন্তার কারণে কেন গর্ভধারণ করতে সমস্যা হবে। তার কারণ হলো অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে ফার্টিলেটের উপরে আঘাত হানতে পারে। 

যার কারণে মহিলারা গর্ভধারণ করতে পারে না। মেয়েদের অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে যে বন্ধুত্বের শিকার হতে পারে এটি নিয়ে মন্তব্য করেছেন কলকাতার ডাক্তার জয়তি মন্ডল তিনি বলেন, অতিরিক্ত চিন্তা করার ফলে আমাদের মাথায় হাইপোথ্যালামাস অংশ থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রলেক্টিন বের হয়।মূলত এটার কারণেই ভ্রন তৈরিতে সমস্যা দেখা দেয়। আর এটাই হলো অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে অনেকের বন্ধ্যাত্ব হওয়ার কারণ। 

বন্ধ্যাত্বের কৃত্রিম কারণ

বন্ধ্যাত্বের কৃত্রিম কারণ বলতে মূলত যেটা বোঝায় মানুষের দৈনন্দিন জীবন চলার পথে তার ওঠা-বসা চলাফেরা খাওয়া-দাওয়ার মধ্যে যে অনিয়ম রয়েছে সেটাকে। মানুষের এই অনিয়ম জীবন চলার কারণেও
মেয়েদের-বন্ধ্যাত্বের-কারণ-জানুন
অনেকে বন্ধ্যাত্বের শিকার হয়ে থাকে। তাহলে চলুন নারী ও পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কৃত্রিম কারণ কি কি রয়েছে সেগুলো একটু বিস্তারিত জেনে নেই।
  • অনিয়ম এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
  • রাতের ঘুম দিনে পাড়া।
  • অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া।
  • অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া।
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা করা।
  • উদাসীনতার কারণেও বন্ধ্যাত্বের কবলে পড়া।
  • অস্বাভাবিক জীবন যাপন যেমন অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করা।
  • মহিলাদের মাসিক চলাকালীন সময়ে সহবাস করা।
  • যৌন স্বাস্থ্যের প্রতি পর্যাপ্ত যত্ন নেওয়া, সেক্সের বিষয়ে কিছু কার্যক্রম এড়িয়ে চলা যেমন উড়াল সেক্স যার মাধ্যমে নারীর যোনি পথে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
  • প্রাথমিক অবস্থায় গর্ভধারণ না হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ না নেওয়া।
  • পুরুষের বেলায় অতিরিক্ত হস্তমৈথুন করা।
  • কিছু পুরুষ মাথায় চুল গজানোর জন্য ওষুধ সেবন করে থাকেন এর কারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। 

FAQ মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ জানতে সাধারণ প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্নঃ মহিলাদের বন্ধ্যাত্বের কারণ কি?
উত্তরঃ সাধারণভাবে ধরে নেওয়া হয় মহিলাদের অনিয়মিত ডিম্বস্ফোটন।

প্রশ্নঃ কোন ভিটামিনের অভাবে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে?
উত্তরঃ ভিটামিন এ এর অভাবে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

প্রশ্নঃ মহিলাদের বন্ধ্যাত্বের সাথে সাধারণ কারণ কি?
উত্তরঃ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম।

প্রশ্নঃ ঔষধ খেলে কি বন্ধ্যাত্ব হতে পারে?
উত্তরঃ দীর্ঘ সময় ধরে বিনোদন এর জন্য ওষুধ সেবন করলে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

প্রশ্নঃ কি খেলে ডিম্বাণু বাড়ে?
উত্তরঃ সূর্যমুখীর বীজ, ডালিম, মসুর ডাল, দারুচিনি, আনারস ও সালমান মাছ।

প্রশ্নঃ নারীরা কখন বন্ধ্যাত্ব হয়?
উত্তরঃ দীর্ঘ সময় ধরে অরক্ষিত যৌন মিলন করার পরেও যখন সন্তান ধারণ করতে অক্ষম হয়।

প্রশ্নঃ গর্ভধারণের সঠিক সময় কোনটি?
উত্তরঃ পূর্ণাঙ্গ ডিম্বাণু ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে তাই সেই সময়টাকে গর্ভধারণের সঠিক সময় হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

উপসংহারঃ মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ জানুন

মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন।আজকের আর্টিকেলটির মধ্যে মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা, ছেলেদের বন্ধ্যাত্বের কারণ, বন্ধত্বের কৃত্রিম কারণ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে বন্ধ্যাত্ব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যারা এতক্ষণের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়েছেন তারা এতক্ষণে বুঝে গেছেন বন্ধ্যাত্ব নিয়ে কি কি আলোচনা করা হয়েছে। 

আপনার যদি কোন বিষয়ে জানার থাকে যেটা আমার আর্টিকেলটির মধ্যে লেখা নেই অবশ্যই মন্তব্য করে যাবেন আমরা আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। আমার লেখা আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকারে আসে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে শিখতে চাই ব্লগ ওয়েবসাইটকে সাবস্ক্রাইব করে পরবর্তী আপডেট পাওয়ার জন্য সাথেই থাকুন। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url