ড্রাগন ফলের ১২ টি উপকারিতা ও ৫ টি অপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি আলোচিত হবে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় একটি ফল হিসেবে দেখা যাচ্ছে ড্রাগন।
এটি দেখতে অনেক চমৎকার এবং খেতে অনেক সুস্বাদু। এর বেশ গুণাগুণ রয়েছে এবং কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে সবকিছু মিলে আর্টিকেলটি আলোচনা করা যাক।
সূচিপত্রঃ ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
- ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
- ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক
- ড্রাগন ফলের প্রকারভেদ সমূহ
- ড্রাগন ফলের পুষ্টি গুনাগুন
- গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
- বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ানোর উপকারিতা
- ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
- ড্রাগন ফলের খোসার গুনাগুন
- ড্রাগন ফলের দাম কত ২০২৫
- ড্রাগন ফলের চাষ পদ্ধতি
- FAQ ড্রাগন খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর
- উপসংহারঃ ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা জানার বিষয়ে অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। এই
ফলটি দেখতে যেমন অনেক লোভনীয় খেতেও তেমন সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। ড্রাগন
একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। একসময় ভারতে এর খুব জনপ্রিয়তা ছিল এখন বর্তমানে
বাংলাদেশেও অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ফলটিকে পিতায়া নামেও ডাকা
হয়।
এই ফলের মধ্যে রয়েছে আয়রন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, খনিজ সহ
বিভিন্ন রকমের উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন
করে। ড্রাগন ফল খেলে আপনি আমি কি উপকার পেতে এবং এটা কিভাবে খেলে সব থেকে
ভালো হবে সে সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন শুরু
করা যাক।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ ড্রাগনের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্যানলিক এসিড সমৃদ্ধ যা ফ্রি রেডিকেল দ্বারা ক্ষতিকর দিকে প্রতিরোধ বাড়ায়। ফ্রি মেডিকেল হল এমন এক খারাপ পদার্থ যা মানব শরীরে ক্যান্সারের সৃষ্টি করে। তাই বলা হয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে অন্যতম একটি ফল হল ড্রাগন।
- ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়ঃ বিশেষজ্ঞরা মনে করে থাকেন শরীরের চিনির মাত্রা কমানোর জন্য বা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ড্রাগন ফল খাওয়া ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য অত্যন্ত ভালো। কারণ এই ফলের মধ্যে আংশিকভাবে ফাইবারের স্পাইক এড়ায়। ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে যে ইনসুলিন তৈরি করে তা ভেঙে যাওয়ার জন্য ড্রাগন ফল কার্যকরী।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ ড্রাগনের মধ্যে এক ধরনের প্রিবায়োটিক যৌগ রয়েছে যা আমাদের অন্তের ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করে। এর পাশাপাশি ভিটামিন সরবরাহ করে যা শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
- বার্ধক্য জনিত ত্বকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকেঃ ড্রাগনের মধ্যে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের অকাল বার্ধক্য দূর করে পাশাপাশি স্ট্রেস বা মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে। সব মিলিয়ে এটি খাওয়ার ফলে সকলের চেহারা অনেক সুন্দর এবং সুস্থ থাকে
- চুলের জন্য উত্তমঃ গবেষকরা বলে থাকেন যে প্রতিদিন এক গ্লাস দুধের সাথে ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে আমাদের চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং চুল ঝলমলে ও নরম থাকে। এছাড়া চুলের মধ্যে থাকা ক্ষতিকর দিকগুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
- হাড়কে মজবুত করেঃ ড্রাগনের মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা বার্ধক্য জনিত হাড়ের সমস্যা বা কোন ধরনের ব্যথা থাকলে তা দূর করে এবং হারকে মজবুত করে। এজন্য ওরা বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যাদের শরীরে হারের সমস্যা রয়েছে তারা যেন নিয়মিত ড্রাগন ফল খাওয়ার চেষ্টা করে।
- চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়ঃ এই ফলটি খাওয়ার ফলে যাদের চোখের লেন্সের সমস্যা রয়েছে তা খুব দ্রুত ভালো হয়ে যায়। কারণ ড্রাগনের মধ্যে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে যা একসময় ভিটামিন এ এর কাজ করে থাকে। আর ভিটামিন এ আমাদের চোখের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়।
- গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উত্তমঃ গর্ভবতী মহিলারা যদি নিয়মিত ড্রাগন ফল খেতে পারে এতে করে তার সন্তানের গঠন অনেক সুন্দর হয় হার মজবুত হয় ভালো থাকে এর পাশাপাশি গর্ভবতী মহিলার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।
- ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ যাদের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেছে তারা যদি ডায়েটের লিস্টে নিয়মিত ড্রাগন ফল খেতে পারে এতে করে খুব দ্রুত ওজন কমে যাবে।
- হার্টকে সুস্থ রাখেঃ যে সকল মানুষের হার্টের সমস্যা রয়েছে ডাক্তারদের পরামর্শ তারা যেন ড্রাগন ফল খায় এতে করে তাদের হার্ট ভালো থাকবে।
- মুখের ব্রণ দূর করেঃ ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে যাদের তাকে ব্রণের সমস্যা রয়েছে খুব তাড়াতাড়ি এইগুলো দূর হয়ে যাবে পাশাপাশ ত্বক অনেক সুন্দর ও মসৃণ থাকে।
ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক
সব জিনিসেরই গুনাগুনের পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিক বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে সকলের ধারণা রাখা উচিত। আপনি যে জিনিসটা খাচ্ছেন
এটা আপনার জন্য ক্ষতিকর নাকি উপকার এর উভয়ই আগে ভালোভাবে জেনে
নিবেন। ড্রাগন ফল আমাদের জন্য উপকারটাই বেশি করে থাকে কিন্তু এর পরেও কিছু
ক্ষতিকর দিক রয়েছে তাহলে চলুন জেনে নিন।
- এলার্জির সমস্যাঃ সাধারণভাবেই বলা যায় যাদের শরীরে অ্যালার্জি রয়েছে তারা খুব একটা খাবার খেয়ে থাকতে পারে না অর্থাৎ বেশিরভাগ খাবার খাওয়ার পরেই তাদের শরীরে কিছু ক্ষতিকর দিক ফুটে ওঠে। যেমন চুলকানি গোটা বের হওয়া লাল হয়ে ফুলে যাওয়া এ ধরনের সমস্যা। আর তাই ড্রাগন হাওয়ার কারণে যাদের অতিরিক্ত এলার্জি রয়েছে তাদের কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- বদহজমঃ ড্রাগন খাওয়ার সময় তার মধ্যে যে কালো কালো ছোট বিচি রয়েছে সেগুলো যদি আপনি ভালভাবে চিবিয়ে না খান তাহলে এগুলো আপনার হজমের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি কিছু সময় এটা থেকে আপনার ডায়রিয়া পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তাই যে খাবারই খান না কেন অবশ্যই ভালোমতো চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- প্রসাবের রং লালঃ অনেক সময় দেখা যায় লাল রংয়ের ড্রাগন খাওয়ার ফলে অনেকেরই প্রসাদ পায়খানা লাল হয়ে যাচ্ছে এতে তেমন কোনো ক্ষতি হয় না তারপরেও কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
- রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিতে পারেঃ যারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ সেবন করছেন তারা অবশ্যই ড্রাগন খাওয়ার পূর্বে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। কারণ ড্রাগন কিছু কিছু সময় আপনার ঔষধের গুণাগুণ নষ্ট করে দিতে পারে।
- কিডনিতে পাথর তৈরিঃ যাদের পূর্ব থেকে কিডনিতে পাথরের সমস্যা রয়েছে এরপরেও তারা যদি নিয়মিত বা অতিরিক্ত ড্রাগন খায় এতে করে কিডনিতে পাথর তৈরির ভূমিকা বাড়াতে পারে কারণ এর মধ্যেও রয়েছে অক্সালেট নামক এক ধরনের যৌগ।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাঃ যাদের খুব স্বাভাবিকভাবে কোন খাবার খাওয়ার ফলে দেখা যায় গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে তাহলে তারা অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
ড্রাগন ফলের প্রকারভেদ সমূহ
প্রতিটা খাবারেরই কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই ফলের মধ্যেও কিছু
প্রকারভেদ রয়েছে অর্থাৎ জাত এবং রং ভিন্ন হওয়ার কারণে এর গুনাগুন ও স্বাদ
একটু ব্যতিক্রম হয়ে থাকে। সচরাচর আমাদের বাজারে আমরা লাল ড্রাগন এবং
সাদা ড্রাগন দেখতে পাই। কিন্তু এর পাশাপাশি আরো কিছু রঙের ড্রাগন রয়েছে
যেগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
- হলুদ ড্রাগনঃ এই রংয়ের ড্রাগনের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং এর মধ্যে ফাইবার রয়েছে যা পেটের সমস্যা দূর করে।
- বেগুনি ড্রাগনঃ এটি দেখতে অনেক সুন্দর এবং খেতেও অনেক সুস্বাদু। এই ড্রাগনের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনার শরীরের খারাপ পদার্থ গুলোকে বের করে সুস্থতা বজায় রাখে।
- গোলাপি ড্রাগনঃ গোলাপী ড্রাগন খেতে কিছুটা মিষ্টি ও কিছুটা টক হয়ে থাকে। এর মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা ভালো চামড়া গঠনে এবং হজম শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
- লাল ড্রাগনঃ সবচেয়ে জনপ্রিয় ড্রাগন হলো লাল ড্রাগন। আমাদের বাজারে এবং হাতের নাগালে এটাই বেশি পাওয়া যায়। এটি মাংসল এবং খেতে অনেক মজাদার। এই ড্রাগনের মধ্যে লাইকোপিক নামক যৌগ রয়েছে যা আমাদের হার্ডকে সুস্থ রাখে।
- সাদা ড্রাগনঃ সাদা ড্রাগনটা খেতে অনেক মজাদার এবং আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকে।
ড্রাগন ফলের পুষ্টি গুনাগুন
- ক্যালোরি ১২০ গ্রাম
- শর্করা ২২ গ্রাম
- প্রোটিন ২ গ্রাম
- তন্ত্র ৫ গ্রাম
- চর্বি ০ গ্রাম
- ভিটামিন এ ১০০ IU
- ভিটামিন সি ৪ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম ২১ গ্রাম
- আয়রন ০.১ গ্রাম
- পরিপোষক ১৭০ গ্রাম
- চিনি ১৩ গ্রাম
- ফাইবার ১০ গ্রাম
- পটাশিয়াম ১৫ গ্রাম
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কেননা ড্রাগন ফল
অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাবার। অনেক গর্ভবতী নারীরা রয়েছেন যারা এই
ফলের গুনাগুন সম্পর্কে এখনো জানেনা। ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে
ভিটামিন, শর্করা, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ বিভিন্ন উপাদান। একজন
গর্ভবতী মহিলার যে পুষ্টিগুলো দরকার সে সবগুলোই পাওয়া যায় এই ফলের
মধ্যে।
বর্তমান সময়ের শুধু গর্ভবতী নারীরা নয় বরং সকলেই এই ফল খেয়ে থাকে এর গুনাগুন
পাওয়ার জন্য।এছাড়াও বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি দেখা যায়। তাহলে চলুন
জেনে নেওয়া যায় এই ফল খাওয়ার ফলে গর্ভবতী নারীদের কি কি উন্নতি হতে পারে।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে
- শিশুর বিকাশে সহায়তা করে
- শিশুর মস্তিষ্ক ভালো থাকে
- হবু মায়ের রক্তস্বল্পতা দূর হয়
- মুখের অরুচি দূর হয়
- মা ও শিশুর হাট ভালো থাকে
- হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়
- ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে
বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ানোর উপকারিতা
আপনার বাচ্চার জন্য অবশ্যই আপনি চাইবেন তাকে পুষ্টি সম্পন্ন খাবার
দিতে। এবং তার পাশে কিছু ফল খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন যেগুলো আপনার বাচ্চার
জন্য উপকার নিয়ে আসে। ঠিক তেমনি একটি ফল হল ড্রাগন যা একটি
বাচ্চার জন্য অনেক উন্নতি করে থাকে। আপনি আপনার বাচ্চার জন্য সব
ধরনের ফল বাছাই করতে পারবেন না।
সেখান থেকে কিছু ফল বেছে নিতে হবে। মোট কথা হলো আপনি কেন ড্রাগন ফল টাই
বেছে নিবেন তাহলে চলুন জেনে নেই। ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ,
ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, আয়রন ও ক্যালসিয়াম সহ বিভিন্ন
উপাদান। এই উপাদানগুলো আপনার শিশুর অন্তের চলাচলে উন্নতি করে থাকে।
তবে অনেক মাই রয়েছেন যারা শিশুর এক বছর বয়স হওয়ার পূর্বেই এটা খাওয়ানোর
চেষ্টা করেন। এটা না করানো ভালো হবে কারণ সেই শিশুটির এই খাবারটি হজম হতে
একটু সমস্যা হতে পারে। তাই এক বছর পূর্ণ হওয়ার পরে খাওয়ানো শুরু
করেন। বাচ্চারাইটি খাওয়ার ফলে তাদের মেধা বৃদ্ধি পায় এবং হাড় বিকাশের
সহায়তা করে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
ড্রাগন ফল আমরা কমবেশি সকলেই চিনি। এটা বিদেশি একটি ফল কিন্তু বর্তমানে
বাংলাদেশেও খুবই জনপ্রিয় পাচ্ছে। এদেশে এখন চাষ করা হচ্ছে ড্রাগন
ফলের। তাই খুব সহজেই বাজার থেকে ক্রয় করা যাচ্ছে। আপনারা অনেকেই
খেয়ে থাকেন আবার অনেকেই এটা পছন্দ করেন না। তারা হয়তো জানেন না যে এই ফল
খাওয়া আমাদের জন্য কতটা উপকারী।
এই ফলটি খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন বাড়ানোর কোন ভয় নেই। এর মধ্যে রয়েছে
বিটা ক্যারোটিন, লাইকোপিক এসিড, ওমেগা, ফ্যাটি এসিড ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ অনেক গুণাগুনে ভরপুর। এটি খাওয়ার কিছু পদ্ধতি
রয়েছে যা আপনি জানতে পারলে সঠিকভাবে খেতে পারবেন এবং এর গুণে গুণান্বিত হতে
পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেই।
- জুস বানিয়ে খেতে পারেন
- চাইলে খোসা ছাড়িয়ে ফলের মতো খেতে পারেন
- রান্না করে খেতে পারেন
- সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন
- দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন
ড্রাগন ফলের খোসার গুনাগুন
আমরা অনেকেই জানি ড্রাগন ফল অনেক উপকারী একটি খাবার। কিন্তু অনেকে আছেন
যারা জানেন না এর খোসাও আমাদের জন্য অনেক পুষ্টিকর খাবার। ড্রাগন ফলের
খোসার বহু গুণাগুণ রয়েছে। এই ফলের খোসার মধ্যেও যে এতগুলো গুণাগুণ
লুকিয়ে রয়েছে তা জানতে পারলে হয়তো অনেকেই অবাক হয়ে যাবেন। তাহলে চলুন
আগে গুনাগুন সম্পর্কে জেনে আসি।
- থায়ামিন
- এনটিঅক্সিডেন্ট
- ওমেগা ৩
- ফ্যাটি অ্যাসিড
- গ্লূটামিন
- ফাইবার
- পটাশিয়াম
- প্রোটিন
- ক্যালরি
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন সি
ড্রাগন ফলের দাম কত ২০২৫
এই ফলটি একটি বহির্বিশ্বীয় ফল। যখন প্রথম এ দেশে এর দেখা মিলেছিল তখন এর
দাম অনেক বেশি ছিল। বর্তমানে সে তুলনায় অনেক কম দামে পাওয়া
যাচ্ছে। ধরুন ২০২৪ সালের কথাই বলি তখন এক কেজি ড্রাগণের দাম ছিল প্রায়
৩০০ টাকা। আবার ভালো মানের ড্রাগনের দাম ছিল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা করে।
এদিকে ২০২৫ সালে এসে এর দাম অনেকাংশে কমে গেছে। কারণ এখন এর চাষাবাদ অনেক
বেড়েছে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তাই বর্তমানে দেখা
যাচ্ছে ভালো মানের ড্রাগন ১৫০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তবে
অনেক জায়গায় আবার ১২০ টাকার মধ্যেও কেজি হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু
মনে রাখতে হবে এটা স্থানভেদে হয়ে থাকে।
কিছু জায়গায় চাষাবাদ বেশি হওয়ার কারণে সেসব অঞ্চলে অনেক দাম কম। আর
যেদিকে চাষবাস নেই সেখানে দাম একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই আপনারা
যারা ড্রাগন ফলের দাম জানার জন্য গুগলে সার্চ করে থাকেন তাদের জন্য এখানে
উল্লেখ করা হলো। তবে মনে রাখবেন যে হয়তো ভবিষ্যতে দাম আরো কিছুটা কমে
যেতে পারে।
ড্রাগন ফলের চাষ পদ্ধতি
ড্রাগন ফলের উদ্ভব হয় আমেরিকায়। তবে বর্তমানে বাংলাদেশেও এটি খুব
জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ২০০৭ সালের দিকে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে এই
ফলের বীজ নিয়ে আসা হয় বাংলাদেশে। এই কাজটি মূলত একটা জাতীয়
গাছ। গাছের ডাল পালায় প্রচুর পরিমাণে কাটা হয়। এই গাছের কোন পাতা
হয়না ডালের সাথেই ফল ধরে।
গাছটির লম্বা হয় প্রায় ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত। বর্তমানে
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে এই ফলের কিছু বীজ উৎপন্ন করা
হয়েছে। যথা বারি ড্রাগন ফল -১, বাউ ড্রাগন ফল -১ তথা
সাদা, বাউলের আগুন ফল -২ তথা লাল ও বাওড্রাগন ফল -৩ । এই গাছের
বংশবিস্তার করা হয় ব্রীজের মাধ্যমে আবার কাটিং এর মাধ্যমেও।
অর্থাৎ এর ডাল কেটে সুন্দরভাবে লাগিয়ে দিলেও সেখান থেকে বংশবিস্তার
সম্ভব। এই ফলের চাষ বর্তমানে চাষিরা ব্যবসার জন্য জমিতে অনেক বড় করে
চাষাবাদ করছে। এছাড়াও শহরের অনেক বাসার ছাদগুলোতে দেখা যাচ্ছে টবের মধ্যে
করে বংশবিস্তারের মাধ্যমে ড্রাগন ফল গাছের চাষ করা এবং সেখান থেকে অনেক
ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে।
তাই আপনিও যদি করতে চান ছোট একটা টবের মধ্যে শুরু করে দিতে পারেন একটি ডাল
দিয়েই।পরিশ্রম খুবই কম শুধু মাঝে মাঝে একটু ইউরিয়ার সার দিবেন এবং গোড়ায়
কোন আবর্জনা বা আগাছা উঠলে সেগুলো পরিষ্কার করে দিবেন আর অবশ্যই নিয়মিত পানি
দিবেন এরপর দেখবেন ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে ফল ধরা শুরু করেছে।
FAQ ড্রাগন খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল কি রক্ত বৃদ্ধি করে?
উত্তরঃ ড্রাগন ফল রক্তের ভিতর থাকা খারাপ পদার্থগুলো বের করে আনে।
প্রশ্নঃ ড্রাগন গাছ কিভাবে লাগাতে হয়?
উত্তরঃ গর্ত খুঁড়ে ১০ থেকে ১৫ দিন পর প্রতি গর্তে ৫০ সেন্টিমিটার দূরত্বে
গাছ লাগাতে হয়।
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল কখন খাওয়া যাবে না?
উত্তরঃ অতিরিক্ত এলার্জি যাদের রয়েছে ড্রাগন খাওয়ার ফলে এই সমস্যাটা
বাড়তে পারে।
প্রশ্নঃ ড্রাগন খাওয়ার ফলে কি পায়খানা লাল হয়?
উত্তরঃ দ্রাগন ফল খাওয়ার কারণে কখনো কখনো প্রসাব পায়খানা লাল হয়ে
যায়।
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল মুখে মাখলে কি হয়?
উত্তরঃ তোকে এই ফল মাখার কারণে ত্বক উজ্জ্বল হয়।
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল কি ওষুধ হিসেবে কাজ করে?
উত্তরঃ এই ফলটি পুরুষের লিঙ্গে রক্ত চলাচল ঠিক রাখে।
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফলের মৌসুম কখন?
উত্তরঃ মে মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত।
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল খেলে কি ঘুম ভালো হয়?
উত্তরঃ এই ফলটি খাওয়ার কারণে যাদের অনিদ্রায় রয়েছে তাদের অনেক ভালো ঘুম
হবে।
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল খেলে কি রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে?
উত্তরঃ এ ফলের মধ্যে আয়রন থাকার কারণে রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি
করে।
প্রশ্নঃ সপ্তাহে কতটুকু ড্রাগন ফল খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ড্রাগন ফল খাওয়াই উত্তম।
উপসংহারঃ ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে যারা জানতে চেয়েছিলেন তাদের জন্য
আজকের আর্টিকেলটি আলোচনা করা হয়েছে। ড্রাগন ফলের অনেক উপকারিতা রয়েছে যা
আপনি খাওয়ার ফলে এগুলো পেতে পারেন। ড্রাগন ফল নিয়ে যদি আরো কোন প্রশ্ন
থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই মন্তব্য করে যাবেন আমরা আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা
করব।
আমার লেখাটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই পাশে থাকবেন এবং শিখতে চাই ব্লক
ওয়েবসাইটকে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। যেন পরবর্তী আপডেট সবার আগে আপনি
পেতে পারেন। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
রইল।পরবর্তী আর্টিকেল নিয়ে হাজির হওয়া পর্যন্ত সুস্থ থাকুন ভালো
থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url