আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা-আনারস খাওয়াতে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়

আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং আনারস খাওয়াতে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায় এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন। আজকের আর্টিকেলটির মধ্যে আনারসের উপকারিতা অপকারিতার পাশাপাশি সকল দিক নিয়ে আলোচনা করা হবে। তাই যারা জানতে চেয়েছিলেন নিচে বিস্তারিত পরুন।

আনারস-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

আনারস একটি সুস্বাদু ফল। যা খেতে অনেকেই পছন্দ করেন আবার কেউ কেউ আছেন যারা নার্ভাস খেতে পছন্দ করেন না। তবে আনারসের মধ্যে যে সকল গুণ রয়েছে এটা জানার পরে হয়তো যারা পছন্দ করেন না তারাও খাওয়া শুরু করবেন। তাহলে চলুন আলোচনা করি।

সূচিপত্রঃ আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি আলোচনা করা হবে। দক্ষিণ আমেরিকার ইউরোপর মানুষ প্রথমে এই আনারসের চাষ শুরু করে। এবং এর পুষ্টি ও স্বাদে ভরপুর দেখে এর নাম রাখা হয় পাইনাপেল অর্থাৎ পাইন+আপেল। এরপরে আস্তে আস্তে এই ফলটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ার কারণে প্রায় সকল দেশের মানুষই এটা খেতে পছন্দ করে।
পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফলটি হল আনারস। আনারসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অনেক উপাদান রয়েছে। যা খাবার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণ করে থাকে। আনারসের মধ্যে যে সকল উপকারিতা রয়েছে তার পাশাপাশি আবার কিছু অপকারিতা রয়েছে চলুন তাহলে আনারসের উপকারিতা সম্পর্কে আগে জেনে আসি। 
  • পুষ্টির অভাব পূরণ করেঃ আনারসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ ছাড়া এরমধ্যে ক্যালসিয়াম সোডিয়াম সহ নানা ধরনের উপাদান রয়েছে যা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের অনেক পুষ্টির অভাব পূরণ করে থাকে।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ আনারসের মধ্যে ব্রমেলেইন নামক একটি উপাদান রয়েছে যা খাওয়ার ফলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আনারস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ আনারসে রয়েছে ফাইবার এবং আঁশ। এবং আনারসের মধ্যে ফ্যাট বা সুগারের মাত্রা কম থাকার কারণে খুব সহজেই আমাদের ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। তাই আপনি আনারসের জুস করে খেতে পারেন বা এমনিও খেতে পারেন।
  • দাঁতের সমস্যা দূর করেঃ আপনার যদি দাঁতের সমস্যা থাকে বা গোড়ালিতে ব্যথা হয় তাহলে আনারস খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ আনারসের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা প্রতিদিন আনারস খাওয়ার ফলে আপনার দাঁতের সুরক্ষা বজায় থাকবে।
  • চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিঃ যাদের চোখের রেটিনা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে গেছে তাদের জন্য আনারস খুবই একটি উপকারী ফল। আনারসের মধ্যে রয়েছে বিটা কেরোটির নামক উপাদান যা খাওয়ার ফলে চোখের রেটিনা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
  • ত্বকের যত্নে আনারসঃ আনারসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি। যা খাওয়ার ফলে আমাদের ত্বককে ভালো রাখে অর্থাৎ ত্বকের মরা কোষ কে দূর করে ত্বকের ভিতর থেকে ময়লা বের করে আনে। এছাড়া কুঁচকে যাওয়া ত্বককে টান টান করে এবং ত্বকের তৈলাক্ত ভাবকে দূর করে।
  • কৃমিনাশক সমস্যা দূর করেঃ যাদের পেটে কৃমির সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য খুব উপকারী একটি ফল আনারস। বিশেষ করে দেখা যায় ছোট বাচ্চাদের পেটে কৃমি থাকার ফলে মাঝে মাঝে পেটব্যথা করে। তাই এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য সকালবেলা খালি পেটে আনারসের জুস খেতে হবে। এতে করে পেটের কৃমি মরে যাবে। 
  • শরীরের ঘা শুকাতে আনারসঃ আপনার শরীরে যদি কোন ধরনের ব্যথা বা আঘাত লাগে এবং কোন ক্ষতের সৃষ্টি হয় তাহলে আনারস খাবেন এতে করে আপনার ক্ষত ভালো হয়ে যাবে।
  • জন্ডিস দূর করতে আনারসঃ ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম আনারসের রসের মধ্যে এক চামচ হলুদের গুড়া এবং দুই চামচ চিনি মিশিয়ে এটি পান করুন এতে করে আপনার জন্ডিস ভালো হয়ে যাবে।
  • কুষ্ঠ রোগে আনারসঃ যাদের শরীরের এই ভয়াবহ কুষ্ঠ রোগ বাসা বেধেছে তারা আনারস খাওয়ার অভ্যাস করুন এবং তাজা আনারসের রস আপনার সেই জায়গাতে লাগিয়ে রাখুন। এতে করে আপনার কুষ্ঠ রোগ ভালো হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনারসঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য আনারসের ভূমিকা অনেক বেশি। আপনি প্রতিদিন আনারসের রসের সাথে একটু আমলকি এবং হরদের গুঁড়া মিশিয়ে সকাল সন্ধ্যা খাওয়ার অভ্যাস করুন এতে করে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
  • জ্বর সারাতে আনারসঃ আমাদের যখন জ্বর হয় স্বাভাবিকভাবেই আমরা কোন খাবার খেতে পারি না মুখে স্বাদ পাই না। তাই আপনি আনারস খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে করে আপনার জ্বর দ্রুত ভালো হয়ে যাবে।

আনারসের অপকারিতা সমূহ জানুন

প্রত্যেকটা জিনিসেরই উপকারের পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তাই দেখা যায় যে আপনি যদি শুধু উপকারীর দিকটা সম্পর্কেই জানেন অথচ অপকারিতার দিকে কোন জ্ঞান না রাখেন তাহলে পরবর্তীতে সমস্যায় পড়বেন এটাই স্বাভাবিক। তেমনি ভাবে আনারসের যেমন উপকারিতা আছে ঠিক তেমনি কিছু অপকারিতা রয়েছে। এবার আনারসের অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
  • এলার্জির সমস্যাঃ যাদের শরীরের এলার্জির সমস্যা রয়েছে খুব স্বাভাবিকভাবেই তারা আনারস খেলে এলার্জি প্রবণতা দেখা দিতে পারে। আনারস খাওয়ার ফলে দেখা যাবে শরীরের কিছু গোটা বের হচ্ছে বা খাওয়ার সময় গলাতে এক ধরনের সুড়সুড়ি ভাব হচ্ছে এছাড়া অনেকের ঠোঁটও ফুলে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনি আনারস খাওয়ার আগে অবশ্যই কেটে লবণ দিয়ে মাখিয়ে ধুয়ে নিবেন।
  • কাঁচা আনারস খেলে বিপদ হতে পারেঃ কাঁচা আনারসের মধ্যে এসিডিটির পরিমাণ অনেক বেশি রয়েছে। তাই কাঁচা আনারস খাওয়ার ফলে আমাদের অনেকের গলার স্লেশমার সমস্যা হতে পারে। আবার অনেকেরই কাঁচা আনারস খাওয়ার ফলে পেট ব্যথার সমস্যা হতে পারে।
  • দাঁতের জন্য ক্ষতিকরঃ যদিও আনারস খাওয়ার ফলে আমাদের দাঁতের মাড়ি মজবুত করা এবং অন্যান্য সমস্যা দূর করে কিন্তু অতিরিক্ত আনারস খাওয়ার ফলে যাদের দাঁতে ক্যাভিটিস ও জেনজিভাইটিস এর সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য বেশি সমস্যা হতে পারে।
  • বাত ব্যথার সমস্যা সৃষ্টিঃ যাদের শরীরে বাত ব্যথার সমস্যা রয়েছে অতিরিক্ত আনারস খাওয়ার ফলে এই ব্যথাটি আবার করে এবং মারাত্মক আকারে দেখা দিতে পারে। তাই আপনার যদি বাত ব্যথার সমস্যা থাকে তাহলে অতিরিক্ত আনারস খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।
  • গর্ভপাত অবস্থায় আনারসঃ যে নারীদের সবে মাত্র কিছুদিন হল গর্ভপাত হয়েছে তাদের আনারস না খাওয়াটাই বেশি ভালো। এই সময়ে আনারস খাওয়ার ফলে সেই মহিলার কিছু সমস্যা হতে পারে। 

আনারস খেলে কি ছেলেদের যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়

টক মিষ্টি এবং স্বাদে ভরপুর এই ফলটির নাম হল আনারস। আনারসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা খাওয়ার ফলে শুধু আমাদের শরীরে নয় বড় যৌন শক্তি বাড়াতেও অনেক ভূমিকা পালন করে। এছাড়া গবেষণায় দেখা গিয়েছে যেসব মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব রয়েছে তারা যদি নিয়মিত
আনারস-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
 আনারস খায় এতে করে বন্ধ্যাত্ব কেটে যাওয়ার একটি সম্ভাবনা রয়েছে। আনারস খাওয়ার ফলে পুরুষের এবং মহিলার যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি মহিলাদের বেশ কিছু সমস্যার সমাধানও হয়। 

পুরুষের যৌনশক্তি বৃদ্ধির প্রভাব

  • আনারস খাওয়ার ফলে পুরুষের লিঙ্গে এবং অন্ডকোষের রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখে।
  • সহবাসের সময় দ্রুত শক্তি বাড়াতে আনারসের ভূমিকা অনেক রয়েছে।
  • আনারসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিংক এবং ম্যাঙ্গানিজ যা খাওয়ার ফলে পুরুষের শুক্রাণুর গতিশীলতা বাড়িয়ে তোলে।
  • আনারসের মধ্যে ইনফ্লেমেটরির মাত্রা বেশি থাকার কারণে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।

আনারস খেলে কি পিরিয়ড ভালো হয়

আমরা যারা মেয়েরা আছি কেবলমাত্র তারাই জানি যে পিরিয়ডের সময় পেট ব্যথা, পিঠে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, বমি বমি ভাব এছাড়া অস্বস্তি একটি খারাপ লাগা যা কোন কিছুতেই ভালো লাগেনা। এমন সময় সকলেই চাই যে কি করলে এবং কোন খাবার খেলে বা প্রাকৃতিক কোন নিয়ম মেনে চললে এই অসহ্য ব্যথা বা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। 

আমরা অনেকেই আছি এই সময়ে হট ব্যাগ ব্যবহার করি বা অনেক সময় কিছু ঔষধ সেবন করে থাকি।এছাড়া আপনি যেটি খুঁজছেন যে কিছু প্রাকৃতিক খাবার।ঠিক তেমনি একটি খাবার হল আনারস চা খাওয়ার ফলে আপনার পিরিয়ডের সময় যে অসহ্য ব্যথা থাকবে সেটা ভালো হয়ে যাবে। আনারসের মধ্যে ব্রোমেলেই নামক একটি উপাদান রয়েছে যা খাওয়ার ফলে আমাদের পেটের প্রদাহকে কমিয়ে তুলতে সাহায্য করে। 

এছাড়া ২০২২ সালের কিউরিয়াস গবেষণা থেকে দেখা গেছে মাসিকের সময় আনারস খাওয়ার ফলে অনেকেরই পেট ব্যথা ভালো হয়ে যায়। কারণ আনারসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা আমাদের পেট ব্যথা কমাতে এবং ভালো করতে অনেক উপকারী হয়ে থাকে। 

গর্ভবতী মহিলার জন্য আনারস খাওয়া কি নিরাপদ

গর্ভকালীন সময়ে একজন মায়ের খাবারের তালিকায় অনেক খাবার পরিহার করতে হয় আবার অনেক ধরনের খাবার যোগ করতে হয়। ঠিক তেমনি একটি খাবার হল আনারস যা খাওয়ার ফলে একজন গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। এছাড়া গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা এবং পারিপার্শ্বিক অনেক সমস্যা হয়ে থাকে। 
গর্ভবতী মায়ের দেখা যায় যে খেতে অরুচি বোধ হচ্ছে এছাড়া খাওয়ার সময় এক ধরনের বমি বমি ভাব হচ্ছে যার ফলে সব খাবারই খেতে পারেনা। কিন্তু আনারস এমন একটি টক মিষ্টি ফল যা খাওয়ার সময় আশা করা যায় তেমন কোন সমস্যা হবে না। এবং সেই গর্ভবতী মা ও রুচি সহকারে এই ফলটি খেতে পারবেন এবং এখান থেকে অনেক পুষ্টির যোগান দিতে পারবে। 

আনারসের মধ্যে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে

আনারসের মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারিতা। এবং তার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা। এছাড়াও আনারসের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যেগুলো হয়তো অনেকেরই অজানা। আনারস খেলে আমরা কি কি পুষ্টিগুণ পেতে পারি এবং যা পাওয়ার কারণে আমাদের শরীরের অনেক ঘাটতির অভাব পূরণ করা সম্ভব। তাহলে চলুন পুষ্টির নামগুলো জেনে নেই।
  • ভিটামিন সি
  • ভিটামিন এ
  • ইনফ্লেমেটরি
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
  • ক্যালসিয়াম
  • ফাইবার
  • ফসফরাস
  • ম্যাগনেসিয়াম
  • পটাশিয়াম
  • ক্যালোরি
  • শর্করা
  • লৌহ

আনারস ও দুধ একসাথে খেলে কি হয়

আমাদের গ্রামের একটি প্রচলিত কথা হলো আনারস এবং দুধ একসাথে খেলে এটা বিষ হয়ে যায় যার ফলে মানুষ ও মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটা একটি কুসংস্কার ছাড়া আর কোন কিছুই নয়। কারণ মানুষের সত্যটা না জেনেই শুধু মন গড়া কথা দিয়েই ভুলভ্রান্তি তৈরি করে। আর গ্রামের মানুষের সহজ সরল এবং শিক্ষার আলো তাদের কম। 

এ কারণে খুব সহজে বিশ্বাস করে নেয় যে আনারস এবং দুধ খাওয়ার ফলে মানুষ মারা যেতে পারে। কিন্তু গবেষণা করে দেখা গেছে যে আনারস এবং দুধ একসাথে খাওয়ার ফলে যেহেতু আনারস টক জাতীয় হয়ে থাকে তাই দুধের সাথে খাওয়ার কারণে এটা কেটে যায় এবং এখান থেকে এক ধরনের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। অর্থাৎ আনারস এবং দুধ একসাথে খাওয়ার ফলে বড়জোর আপনার গ্যাসের সমস্যা, পেট ফাঁপা, বা পেট ব্যথা এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।

এছাড়া যে কুসংস্কার চলে আসছে এটা কোনভাবেই বাস্তবতা প্রমাণ করে না। তবে আপনি চেষ্টা করবেন আনারস এবং দুধ একসাথে না খাওয়ার। যেহেতু আনারস এবং দুধ একসাথে খাওয়ার কারণে কিছু সাইড ইফেক্ট হয়ে থাকে তাই আর রিক্স নিয়ে না খাওয়াটাই আপনার জন্য ভালো। শুধু আনারস নয় দুধ খাওয়ার পরে টক জাতীয় যে কোন খাবার খেলেই আপনার গ্যাস্ট্রিক বা পেট ফাঁপা এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। 

গরমে আনারস খাওয়ার উপকারিতা

গরমে আনারস খাওয়ার বেশ উপকারিতা রয়েছে। গরমের সময় মানুষ অতিরিক্ত ঘামতে থাকে যে কারণে তার শরীর থেকে অনেক পানি বের হয়ে যায়। এছাড়া ঘাম বের হয়ে যাওয়ার কারণে শরীর কষা হয়ে যায়। এর জন্য দেখা যায় অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছে। তাই সকলেই চেষ্টা করে গরমের সময় এমন কিছু খাবার খেতে যা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে এমন একটা ফিডব্যাক হিসেবে কাজ করবে। 

যে গরমে যতই ঘামি না কেন খাবারগুলো খাওয়ার ফলে ঠিকই ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে। গরমে খাওয়ার মত অনেক ধরনের খাবার রয়েছে তার মধ্যে একটি উন্নত মানের খাবার হল আনারস। আনারসের মধ্যে পানির পরিমাণ বেশি থাকার কারণে গরমের সময় এক টুকরো আনারস খেতে যেন অমৃত লাগে। যখন আপনি রোদে থেকে বা বাহিরে থেকে আসার পরে একটু আনারস মুখে দিবেন দেখবেন এর স্বাদ টাই অন্যরকম। 

এছাড়া আনারসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম যা এই গরমের সময় খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে অনেক বেশি শক্তি যোগান দিবে। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ তাই গরমের সময়ে চেষ্টা করবেন প্রতিদিন একটু করে হলেও আনারস খাবার। এটা যখন বাজারে প্রথম ওঠে তখন একটু দাম বেশি থাকে কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পরে কমতে থাকে। তাই খুব সহজে এটি কিনে নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করুন এই গরমে। 

আনারস কোন কোন রোগের জন্য নিরাময়ক

আনারস খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের অনেক রোগ নিরাময় করা যায়। যারা করোনা কালীন সময়ে করণায় আক্রান্ত হয়েছেন তারাই জানেন যে আপনাদের হজম শক্তিতে একটু সমস্যা রয়েছে। অর্থাৎ যে কোন খাবার খেলে সহজেই হজম হতে চায় না। তাই আপনি চাইলে এখন থেকেই আনারস খাওয়া শুরু করতে পারেন এতে করে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং পেটের সকল সমস্যা দূর করবে।

এরপরে যাদের ক্যান্সারের মতন মরণব্যাধি রোগ বাসা বেধেছে তাদের জন্য খুব খুব উপকারী একটি খাবার হিসেবে আনারস বেছে নিতে পারেন। আনারসের মধ্যে রয়েছে ব্রোমেলেন নামক এনজাইম যা আপনার শরীরের এই সকল দিকে সমস্যা দূর করবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। আনারস নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের ভিতরে জমে থাকা ময়লা এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলোকে বের করে আনতে পারে। 

এছাড়া যাদের জ্বর হয়ে থাকে জ্বর মুখে আনারস খেতে একদমই অমৃতর মত লাগে। ডাক্তাররাও পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে জ্বরের সময়ে আনারস খেলে অনেক দ্রুত জ্বর সেরে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে এবং মুখে রুচি ফিরে আসে পাশাপাশি শক্তি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তাই আপনারা অবশ্যই চেষ্টা করবেন আনারস খাওয়ার এতে করে আপনার অনেক উপকার হবে।

আনারস খেলে কি এলার্জি বেশি হয়

খুব স্বাভাবিক একটা কথা রয়েছে যে অতিরিক্ত কোন কিছু খাওয়াই শরীরের জন্য ভালো নয়। যাদের শরীরে এলার্জি রয়েছে তারা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে আনারস খেয়ে থাকে তাহলে এর সাইড ইফেক্ট হিসেবে অনেক সময় দেখা যাবে শরীরের লাল লাল ফোস করে বের হবে এছাড়া অনেকের ঠোঁট ফুলে যাবে এবং অতিরিক্ত আনারস খাওয়ার ফলে অনেকের গলায় সুরসুরি বোধ হয় এবং গলাও জ্বলা ভাব হয়। 

আনারসের মধ্যে ব্রোমেলেইন নামক এনজাইম থাকার কারণে অতিরিক্ত এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে
পারে। আবার অনেকের মুখে গুটা গুটা বের হয়। তাই আপনাদের যাদের শরীরে এলার্জির সমস্যা একটু বেশি রয়েছে তারা চেষ্টা করবেন অল্প পরিমাণে আনারস খাওয়ার। অতিরিক্ত আনারস খেয়ে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনা থেকে বিরত থাকুন।

আনারস খাওয়ার নিয়ম জানুন

আনারস যদি আপনি সঠিক নিয়মে খেতে পারেন এতে করে উপকারিতা বেশি পাবেন। কারন সব জিনিসেরই খাওয়ার এবং কোন সময় খেতে হবে তার কিছু নিয়ম রয়েছে আপনি যদি সেটা মেনে খেতে পারেন এতে আপনার কোন সাইড ইফেক্ট হিসেবে ক্ষতি হবে না এবং উপকারটা ভালোভাবে পাবেন। তাহলে চলুন আনারস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে একটু জেনে আসি।

আনারস-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

  • আনারস প্রথমেই কেটে নেওয়ার আগে সুন্দর করে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এতে করে আনারসের গায়ে থাকা বিভিন্ন খারাপ ব্যাকটেরিয়া বা ময়লা দূর হয়ে যাবে। এরপরে এর খোসা ছাড়িয়ে হালকা একটু লবণ ছিটিয়ে দুই থেকে তিন স্লাইস খাওয়ার চেষ্টা করুন। 
  • চেষ্টা করবেন পাকা এবং রসালো আনারস খাওয়ার এতে আপনার উপকার হবে। আর যদি আপনি অপরিপক্ক এবং কাঁচা আনারস খেতে থাকেন এতে আপনার পেটে বিভিন্ন সমস্যা হবে। 
  • সকালে খালি পেটে না খাওয়াঃ অনেকেই আছেন যারা সকালে খালি পেটে আনারস খান। যেহেতু এই ফলটি টক মিষ্টি হয়ে থাকে এর কারণে খুব স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেওয়া হয় যে খালি পেটে টক জাতীয় কোন খাবার খেলে খুব সহজেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন সকালে খালি পেটে আনারস না খাওয়ার বরং কিছু খাবার খাওয়ার পরে আনারস খাবেন।
  • দুপুরে আনারস খাওয়াঃ আনারস খাওয়ার সর্বোত্তম ভালো সময় হলো দুপুরে খাবার খাওয়ার পরে দুই টুকরো আনারস খাওয়া। এতে করে আপনার কোন গ্যাস্টিক বা এসিডিটির সমস্যা দেখা দিবে না।
  • রাতে ঘুমানোর আগে না খাওয়াঃ আপনি যদি রাতে ঘুমানোর আগে আনারস খেয়ে থাকেন এতে করে আপনার অস্বস্তি ভাব হতে পারে এবং পেটের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেহেতু আপনি আনারস টি খাওয়ার পরে ঘুমাতে চলে যাবেন তাই এটি তখন তাড়াতাড়ি হজম হবে না। আর এ কারণেই রাতে ঘুমানোর আগে আনারস না খাওয়াই ভালো।

উপসংহারঃ আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

উপরে উল্লেখিত আনারস সম্পর্কে এর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনার উপকারিতা অপকারিতা এছাড়া আনারসের মধ্যে যে সকল গুনাগুন রয়েছে সেগুলো সহ আনারস কখন এবং কিভাবে খেতে হবে তাহলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে এ সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আপনারা যারা সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়েছেন তারা হয়তো বুঝে গেছেন যে আপনার আমার শরীরের উপকারের জন্য আনারস ফলটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। 

আপনার যদি আনারস সম্পর্কে আর কোন প্রশ্ন থেকে থাকে যার উত্তর আমার এই আর্টিকেলটির মধ্যে লেখা নেই তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানিয়ে যাবেন এতে করে আমরা আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। আর আমার লেখা আর্টিকেলটি পড়ে ভালো থাকলে অবশ্যই শিখতে চাই ব্লগ ওয়েবসাইটকে সাবস্ক্রাইব করে পাশেই থাকুন। আর্টিকেলটির সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url