পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে গোপন টিপস

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে গোপন টিপস রয়েছে যা আপনারা অনেকেই জানেন না। আপনারা অনেকেই পেয়ারা খেতে পছন্দ করেন এবং অনেকেই জানেন যে পেয়ারার মধ্যে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে যেগুলো জানলে আপনি নিজেও অবাক হতে পারেন। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক। 

পেয়ারা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

পেয়ারার পাশাপাশি এর পাতাও অনেক উপকারী হয়ে থাকে। আজকের আর্টিকেলটির মধ্যে পেয়ারা ও পেয়ারার পাতা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। যারা পেয়ারা ও পেয়ারার পাতা সম্পর্কে গোপন তথ্য পেতে চান তারা অবশ্যই আর্টিকেলটি সম্পন্ন করবেন। নিচে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা হলো।

সূচিপত্রঃ পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে হলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আম খাওয়ার গুনাগুন ও ক্ষতিকর সম্পর্কে বর্ণনা করা হবে।আমরা সকলেই জানি পিয়ারা আমাদের জন্য কতটা পুষ্টিকর একটি ফল। পেয়ারা খাওয়ার ফলে আমরা শারীরিকভাবে অনেক উপকার পেয়ে থাকি।


পেয়ারার ইংরেজি শব্দ হল গুয়াভা। পেয়ারার মধ্যে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী একটি খাবার। পেয়ারার মধ্যে লাইকোপিক নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা খাওয়ার ফলে আমরা স্বাস্থ্যগত অনেক উপকার পেয়ে থাকি। তাহলে চলুন বিস্তারিত আলোচনা করে জেনে নেই যে পেয়ারা খাওয়ার কি কি উপকারিতা রয়েছে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ পেয়ারাতে রয়েছে অধিক পরিমাণে ভিটামিন সি যা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ পেয়ারাতে রয়েছে পটাশিয়াম তাই পেয়ারা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
  • শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ আমাদের শরীরের মধ্যে জমে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলকে বের করে আনে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে যার ফলে শরীর সুস্থ থাকে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করেঃ নিয়মিত পেয়ারা খাওয়ার ফলে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তা দূর করে এবং পেটের মধ্যে বদহজমকে সারিয়ে তোলে।
  • ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ পেয়ারার মধ্যে আন্টি অক্সিডেন্ট এর মাত্রা থাকার কারণে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • মুখের দুর্গন্ধ দূর করেঃ পেয়ারা খাওয়ার ফলে যাদের মুখে দুর্গন্ধ রয়েছে তা খুব সহজেই দূর করতে পারে।মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পেয়ারার ভূমিকা অনেক বেশি এবং পেয়ারা চিবিয়ে খাওয়ার ফলে দাঁতের গোড়া অনেক মজবুত হয় এবং দাঁত ভালো থাকে।
  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ পেয়ারার মধ্যে ভিটামিন এ এর পরিমাণ রয়েছে তাই পেয়ারা খাওয়ার ফলে আমাদের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই যাদের চোখে সমস্যা রয়েছে তারা চেষ্টা করবেন নিয়মিত পেয়ারা খাওয়ার অভ্যাস করতে।
  • হার্ট ভালো রাখেঃ পেয়ারার মধ্যে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম থাকার ফলে এই ফলটি খেলে আমাদের হার্ট ভালো থাকে।
  • গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারীঃ পেয়ারার মধ্যে রয়েছে ফলিক এসিড যা খাওয়ার ফলে একজন গর্ভবতী মায়ের অনেক উপকার হয়ে থাকে।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ পেয়ারার মধ্যে গ্লুকোজের পরিমাণ কম থাকার কারণে এই ফলটি খাওয়ার কারণে ওজন কমাতে অনেক সুবিধা হয়।
  • মাসিকের ব্যথা দূর করেঃ অনেক নারী রয়েছে যাদের মাসিক চলাকালীন সময়ে পেটের ব্যথায় কাতরাতে থাকে। তাই সেই সময়ে পেয়ারা বা পেয়ারা পাতার রস খাওয়ার ফলে এই ব্যথা দূর হয়ে যায়।
  • বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করেঃ মানুষের যখন বয়স বেড়ে যায় তখন চামড়া কুঁচকে যায়। ঠিক সেই জায়গা থেকে নিয়মিত পেয়ারা খাওয়ার ফলে আপনার চামড়া টানটান থাকবে এবং বয়সের ছাপ বুঝতে দিবে না।
  • জ্ঞান বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করেঃ শিশু বিশেষজ্ঞদের মধ্যে পেয়ারা খাওয়ার ফলে শিশুদের বুদ্ধি বিকাশ পায়। পেয়ারাতে রয়েছে ভিটামিন বি যা খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে।

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা জানুন

প্রতিটা জিনিসেরই উপকারের পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিক থাকে। আর তাই পেয়ারা খাওয়ার গুনাগুন পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে যা আপনাকে অবশ্যই জেনে রাখতে হবে। আপনি যেকোনো বিষয়েই ভাল ফল পেতে চাইলে অবশ্যই সেই বিষয়ে আগে তার উপকার ও অপকার দুটো বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। 
পেয়ারা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
আপনি যে কোন খাবার পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার কারণে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয় যেমন ঠিক তেমনি কোন খাবার অতিরিক্ত খাওয়াও উচিত নয়। তাহলে চলুন পেয়ারা খাওয়ার ক্ষতিকর  দিক সম্পর্কে কি কি রয়েছে সেগুলো বিস্তারিত জেনে নেই।
  • ব্যাকটেরিয়াঃ অন্যান্য ফলের মত ব্যাকটেরিয়ার মধ্যেও সংক্রমণ রয়েছে। বিশেষ করে পেয়ারার উপরে অর্থাৎ পেয়ারা চামড়া যদি কোন কিছু দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত থেকে থাকে এবং কালসেভাব হয় তাহলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনি ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচার জন্য পেয়ারার চামড়া ফেলে দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। 
  • পেট ফাঁপাঃ পেয়ারা ফলটি হলো উচ্চ  ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ খাবার। পেয়ারার মধ্যে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা আমাদের শরীরের কিছু ব্যাকটেরিয়ার সাথে মিশে পেটে গ্যাস উৎপন্ন করে এবং যার ফলে পেটের ব্যথা করে এবং পেট ফেঁপে যায়।
  • ডায়রিয়া হওয়াঃ পেয়ারার মধ্যে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে এর বীজ রয়েছে এবং এই বীজ একটু শক্ত হয়ে থাকে যার কারণে এই খাবারটি হজম করতে সময় লাগে। কিছু কিছু সময় অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়ার ফলে সহজে হজম হতে চায় না যার কারণে পেটে ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ব্লাড সুগার বৃদ্ধিঃ অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়ার ফলে আপনার ব্লাড সুগার বেড়ে যেতে পারে। যেহেতু পেয়ারার মধ্যে কোন ফ্যাট বা প্রোটিন নেই যার ফলে এ খাবারটি খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ক্ষুধা লেগে যায়। আপনি লক্ষ্য করবেন পেট ভরে পিয়ারা খাওয়ার কিছুক্ষণ পরে আবার ক্ষুধা লেগে যাচ্ছে।
  • একজিমার সমস্যা দেখা দেওয়াঃ অতিরিক্ত পরিমাণে পেয়ারা খেলে একজিমার সমস্যা দেখা দিতে পারে কারণ পেয়ারার রস থেকে একজিমার সৃষ্টি হয়।
  • দাঁতে ব্যথাঃ অতিরিক্ত পরিমাণে পেয়ারা খাওয়ার কারণে অনেকেরই দাঁতের গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। তাই অতিরিক্ত না খেয়ে স্বাভাবিক খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
  • ঠান্ডা জনিত সমস্যা হলেঃ আপনি যদি ইতিমধ্যে ঠান্ডা জনিত সমস্যায় ভুগতে থাকেন তাহলে এই অবস্থায় পেয়ারা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। তা না হলে আপনার সমস্যা আরো বাড়তে পারে। 

পেয়ারা পাতার উপকারিতা দেখুন

পেয়ারা এমন একটি ফল যা ছোট বড় কম বেশি অনেকেই পছন্দ করে থাকে। এটি খেতেও যেমন স্বাদ তেমনি স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে ও অনেক উপকারী। আপনারা অনেকেই জানেন না যে পেয়ারার সাথে পেয়ারার পাতা ও আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। পেয়ারা পাতার মধ্যে রয়েছে আন্টি অক্সিডেন্ট, আন্টি ইনফ্লেমেটরে ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এর বৈশিষ্ট্য যা খাওয়ার ফলে অনেক রোগের উপশম হয়ে থাকে।

আপনি পেয়ারা পাতার উপকারিতা দেখলে হয়তো একটু অবাক হবেন যে এই পাতার মধ্যে এত ঔষধি গুনাগুন রয়েছে যা এর আগে আপনি জানতেন না। পেয়ারা পাতা সর্দি কাশি থেকে শুরু করে ডেঙ্গুর মত  প্রাণঘাতী রোগকেও ছাড়িয়ে তুলতে পারে। তাহলে চলুন পেয়ারা পাতার গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
  • মাড়ি ব্যথা দূর করতেঃ আপনাদের অনেকেরই দাঁতের গোড়ায় বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে মারি ফুলে যাওয়া বা ব্যথা করা এটি দূর করতে পেয়ারা পাতার সাথে একটু লবণ ও কয়েকটা লবঙ্গ নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিবেন এরপরে পানিটা হালকা ঠান্ডা করে গড় গড়িয়ে কুলি করবেন তাহলে এর ফলাফল দেখতে পারবেন খুব দ্রুত।
  • ডায়রিয়া সমস্যার সমাধানঃ আমরা জানি যে যখন ডায়রিয়া হয় মানুষ খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। ঠিক সেই সময়ে পেয়ারা পাতার সাথে চালের আটা মিশিয়ে পানি ফুটিয়ে সেই পানি ফিল্টার করে খাওয়ার ফলে উপকার হয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে পেয়ারা পাতার নির্যাস ডায়রিয়া রোগের জন্য অনেক ভালো ঔষধি হিসেবে কাজ করে থাকে।
  • ওজন কমাতে পেয়ারা পাতার রসঃ আপনারা অনেকেই আছেন যে বয়সের তুলনায় অতিরিক্ত মোটা বা ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাই ওজন কমানোর জন্য আপনি নিয়মিত পেয়ারা পাতার রস খেতে পারেন। এতে আপনার ওজন দ্রুত কমতে সাহায্য করবেন কারণ পেয়ারা পাতার রসে রয়েছে বায়ো একটি যৌগ যা আপনার শরীরের কার্বোহাইড্রেট শোষণে বাধা দিতে পারে। এছাড়াও পেয়ারা পাতার রসে চিনি ও ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে পেয়ারা পাতার রসঃ গবেষণায় দেখা গেছে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগে পেয়ারা পাতার রস অনেক উপকারী একটি উপাদান। ১০০ গ্রাম পেয়ারা পাতার ক্বাথ নিয়মিত পান করলে আপনার ফুসফুসের লেবারের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। 
  • ক্ষত বা সংক্রমণ এড়াতে পেয়ারা পাতার রসঃ ক্ষত বা সংক্রমণ এড়াতে পেয়ারা পাতার রস অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। ক্ষতর উপরে পেয়ারা পাতার রস কয়েকবার লাগানোর ফলে খুব দ্রুত এই ক্ষত শুকিয়ে যায়।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করেঃ আপনারা যখন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগতে থাকেন তখন দেখবেন পেটে ব্যথা করছে তাই ওই সময়ে আপনি পেয়ারার কচি পাতা একটু লবণ দিয়ে চিবিয়ে খাবেন এতে করে খুব দ্রুত আপনার পেটের ব্যথা ভাল হয়ে যাবে।
  • ত্বকের কালো দাগ দূর করতেঃ যাদের স্কিনে ব্রণ বা ফুসকুড়ি উঠে জায়গায় জায়গায় কালো কালো দাগ পড়ে গেছে তাদের জন্য পেয়ারা পাতার রস অনেক উপকারী। নিয়ম করে সেই জায়গায় লাগালে খুব দ্রুত এই কালো দাগ উঠে যাবে। 

পেয়ারা পাতার অপকারিতা দেখুন

পেয়ারা পাতার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর  দিক ও রয়েছে। প্রত্যেক ভালো জিনিসের পিছনে তার মন্দ দিক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন যে পেয়ারা ও পেয়ারা পাতার রসে আপনি এর গুনাগুন বেশি পাবেন বিশেষ করে আপনি যদি নিয়ম মেনে খেতে পারেন এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে দূরে থাকেন তাহলে কোন সমস্যা হবে না। 

পেয়ারা পাতার রস খাওয়ার পূর্বে গর্ভবতী মহিলারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। কারণ পেয়ারা পাতার রসে কিছু সাইড ইফেক্ট রয়েছে যা আপনার অনাগত সন্তানের উপর পরতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে পেয়ারা পাতার রস খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায় যার ফলে হার্ট এটাকে ঝুঁকি বেড়ে যায়।

আপনারা হয়তো এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন যে পেয়ারার চেয়ে পেয়ারা পাতার রসে এর গুনাগুন কতটা বেশি এবং এটা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো কাজ করে থাকে। তাই আপনি কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় এই রস সেবন করতে পারেন কারণ পেয়ারার পাতা বিভিন্ন গুণাগুনে ভরপুর এবং নূন্যতম কিছু ক্ষতি রয়েছে তা আপনি মেনে খাওয়ার ফলে এই ক্ষতি থেকে বেঁচে যাবেন।

খালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

অনেকেই মনে করে থাকেন যে খালি পেটে পেয়ারা খেলে হয়তো সমস্যা হতে পারে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে খালি পেটে পেয়ারা খেলে বরং বেশি উপকার পাওয়া যায়। খালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার ফলে সর্দি কাশির মতো সমস্যা খুব সহজে দূর হয়ে যায়। পেয়ারার মধ্যে রয়েছে ফাইবার যা খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর হয়। 

এছাড়াও পেয়ারার মধ্যে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন তাই পেয়ারা খাওয়ার ফলে আমাদের চোখে দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পেয়ারা খাওয়ার ফলে আমরা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেয়ে থাকি। আমাদের শরীরের অনেক ঘাটতি পূরণ করে থাকে এই পেয়ারা এবং পেয়ারা পাতার রস। তাই আপনি যদি নিয়মিত খালি পেটে পিয়ারা খেতে পারেন এতে করে অনেক উপকার পাবেন।

রাতে পেয়ারা খেলে কি হয়

পেয়ারা হল যুক্ত একটি ফল। এই ফলটি খাওয়ার ফলে সব মানুষেরই যে দ্রুত হজম হবে বিষয়টা এরকম নয়। এটি আশ যুক্ত ফল হওয়ার কারণে অনেকেরই হজম হতে অনেকটা সময় লেগে যায়। অনেক সময় এই ফলটি রাতে খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দেখা যায় আর তাই হজম হতে সমস্যা হয় এমনকি পেট ফেঁপে যায়। 

তাই আপনি সুস্থ থাকার জন্য এবং সঠিক ফলাফল পাওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন দিনের বেলায় হাঁটাচলা করার সময়ে পেয়ারা খাওয়ার। এছাড়াও আপনি ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চের আধাঘন্টা পর চেহারা খেতে পারেন এতে করে আপনার হজমশক্তিতে কোন সমস্যা হবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে পেয়ারা ফলটি রাতে খাওয়ার চেয়ে দিনে খাওয়ায় বেশি উত্তম।

পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খেলে যে উপকার পাবেন

প্রতি পরিচিত একটি ফল হলো পেয়ারা যা খেতে অনেক সুস্বাদু। এই ফলের মধ্যে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন সি, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এন্ড টি ইনফ্লেমেটরি, সহ বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা। ফলটি যেমন আমাদের জন্য খুব উপকারী তেমনি আবার এর পাতাও আমাদের শরীরের জন্য খুব বেশি উপকারী। শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে পেয়ারা পাতার রস অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।

এছাড়াও দ্রুত ওজন কমানো সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে পেয়ারা পাতার রস। আর এটি সঠিকভাবে খাওয়ার নিয়ম হলো এর কচি পাতা লবণ দিয়ে চিবিয়ে সরাসরি এর রস খাওয়া। তাছাড়াও আপনি পাতা পানির সাথে ফুটিয়ে সেই পানি পান করতে পারেন। তাই আপনি যেভাবেই পেয়ারা পাতার রস খান না কেন ঠিক সেভাবেই উপকার পেয়ে যাবেন।

যে রোগে অধিক পিয়ারা খেলে ক্ষতি হতে পারে

ভিটামিন সি যুক্ত এই ফল হল পেয়ারা যা খেলে আমরা অনেক উপকার পাই। কিন্তু এই পেয়ারা আবার এমন কিছু রোগ রয়েছে যার জন্য ক্ষতিকর দিক হিসেবে কাজ করে। এক কথায় পেয়ারা আমাদের জন্য উপকারী হলেও কিছু কিছু মানুষের জন্য এটি একদমই খাওয়া উচিত নয়। তো সেটা নিয়েই আলোচনা করব যে কোন মানুষ বা কোন রোগীরা পেয়ারা খেতে পারবে না।
  • ঠান্ডা জনিত সমস্যাঃ যারা পূর্বে থেকেই অধিক পরিমাণে ঠান্ডায় ভুগছেন তাদের জন্য একদমই পেয়ারা খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে করে আপনার ঠান্ডার সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
  • গর্ভবতী মায়ের জন্যঃ গর্ভবতী মহিলারা যদি অধিক পরিমাণ পেয়ারা খেয়ে থাকে এতে করে তাদের অনেক সমস্যা হতে পারে তার মধ্যে একটি হল হজম শক্তিতে সমস্যা দেখা দেওয়া।
  • মাথা ব্যাথার সমস্যাঃ পেয়ারা পাতার রস অধিক পরিমাণে খাওয়ার ফলে হতে পারে আপনার মাথা ব্যাথা ও কিডনিতেও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ডায়রিয়া আমাশয় হলেঃ আপনি যদি ডায়রিয়া ও আমাশয় ভুগতে থাকেন তাহলে পেয়ারা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন তা না হলে সমস্যা বেশি হতে পারে।
  • পেটের সমস্যা থাকলেঃ অতিরিক্ত পরিমাণে পেটের সমস্যা রয়েছে যাদের অর্থাৎ যে কোন খাবার খেলে সহজে হজম হতে চায় না তাদের জন্য অতিরিক্ত পেয়ারার রস না খাওয়াই ভালো।

পেয়ারা নাকি আপেল কোনটি বেশি উপকারী

শরীরকে সুস্থ রাখতে ফলের ভূমিকা অনেক বেশি। অনেক ফলের মধ্যে সহজলভ্য দুটি ফল হল পেয়ারা ও আপেল। যাও ভাই আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। উভয় ফলই খেতে অনেক সুস্বাদু এবং হাতের নাগালেই খুব সহজে পাওয়া যায়। উভয় ফলের মধ্যে কিছু তুলনা রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে কোনটা আপনার জন্য বেশি ভালো হবে।
পেয়ারা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
আপনার পছন্দ, সাদ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বাস্থ্যর উপর ভিত্তি করে আপনি এই ফল নির্বাচন করতে পারেন। অনেকেই বলে থাকে আপেলের চেয়ে পেয়ারা বেশি উপকারী। তাহলে চলুন দেখি। একটি পেয়ারার মধ্যে দৈনিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি থাকে ২০০% অপরদিকে আপেলের মধ্যে রয়েছে ১৪%। ক্যালরি থাকে এবং একটি পেয়ারার মধ্যে ক্যালরি থাকে।
 
তবে আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ হলো আপেলের চেয়ে পেয়ারা বেশি খাওয়ার জন্য।  এতে করে পেয়ারা অল্প মূল্যে পেয়ে যাবেন এবং এর পুষ্টিগুণে অধিক বেশি আপনার শরীরে উপকার করবে। আর যেহেতু আপেলের মূল্য অনেকাংশেই বেশি এবং সবাই এটি কিনে খাওয়ার সামর্থ্য রাখেনা তাই আপনার আমার জন্য পেয়ারা ফলটি অনেক ভালো হবে। 

FAQ সাধারণ প্রশ্ন উত্তর পিয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রশ্নঃ অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে শরীরে কি কি ক্ষতি হতে পারে?
উত্তরঃ অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়ার ফলে আপনার ডায়রিয়া মাসে বা পেটে কিছু সমস্যা হতে পারে।

প্রশ্নঃ একটি পেয়ারাতে কত ক্যালরি থাকে?
উত্তরঃ একটি পেয়ারাতে প্রায় ১০০ গ্রাম ক্যালোরি থাকে।

প্রশ্নঃ সকালে খালি পেটে পেয়ারা পাতা খেলে কি হয়?
উত্তরঃ খালি পেটে পেয়ারা পাতার রস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর হয়।

প্রশ্নঃ রাতে পেয়ারা খেলে কি হয়?
উত্তরঃ পেয়ারা আজ যুক্ত হওয়ার কারণে রাতে খেলে হজম করতে সমস্যা হতে পারে।

প্রশ্নঃ পেয়ারা খেলে কি ওজন বৃদ্ধি পায়?
উত্তরঃ না বরং পিয়ারা খেলে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

প্রশ্নঃ পেয়ারা কখন খাওয়া বেশি ভালো?
উত্তরঃ ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চ করার আধা ঘন্টা পর হাঁটা চলার সময় খাওয়া বেশি ভালো।

প্রশ্নঃ পেয়ারা পাতার রস কি চুলের জন্য উপকার করে?
উত্তরঃ প্রতিদিন পেয়ারা পাতার রস চুলে মাখলে আপনার চুল গজাবে, বৃদ্ধি পাবে, সিল্কি হবে, রুক্ষতা দূর হবে ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

প্রশ্নঃ প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়া যাবে কারণ পেয়ারাতে রয়েছে ভিটামিন সি যা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্নঃ পেয়ারা খেলে কি মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ পেয়ারা ও পেয়ারার পাতা চিবিয়ে খেলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় এছাড়াও দাঁতের মাড়ি মজবুত হয়।

উপসংহারঃ পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা যারা জানতে চেয়েছিলেন তাদের জন্য এই আর্টিকেলের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পেয়ারার পাশাপাশি পেয়ারা পাতার রস এর গুনাগুন ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কেও বিভিন্ন বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে আপনারা যারা আর্টিকেলটি সম্পন্ন পরেছেন তারা বুঝে ফেলেছেন যে পেয়ারা ও পেয়ারা পাতার রস আমাদের জন্য কতটা উপকারী।

পেয়ারা এবং পেয়ারা পাতা নিয়ে যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করে যাবেন এতে করে আমরা আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। আমার লেখা আর্টিকেলটি পড়ে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে শিখতে চাই ব্লগ ওয়েবসাইটকে সাবস্ক্রাইব করে পাশেই থাকুন যেন পরবর্তী আপডেট সবার আগে আপনি পেতে পারেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url