বাচ্চা না হলে কি করতে হবে-বাচ্চা কনসিভ করার উপায়

বাচ্চা না হলে কি করতে হবে এই বিষয়গুলো অনেকেরই অজানা রয়েছে। বর্তমান সময়ে অনেক বড় একটি সমস্যা দেখা দিচ্ছে অনেক দাম্পত্য জীবনে। অনেক স্বামী স্ত্রীর মাঝে কিছু সমস্যার কারণে বাচ্চা হচ্ছে না। তাই বাচ্চা না হলে কি করতে হবে সে বিষয় নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি আলোচিত হবে।

বাচ্চা-না-হলে-কি-করতে-হবে

একটি সংসারে বাচ্চা না থাকলে সে সংসারে যেন কোন আনন্দই নেই। আমাদের পিতা-মাতার কাছে যেমন আমাদের অনেক গুরুত্ব রয়েছে ঠিক তেমনি আবার আমাদের সন্তানের জন্য অনেক ভালোবাসা, মায়া, মমতা, আশা, আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি জড়িয়ে রয়েছে। তাই সকলেই চায় তার ফুটফুটে সন্তান থাকুক। তাহলে চলুন বাচ্চা না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। 

সুচিপত্রঃ বাচ্চা না হলে কি করতে হবে

বাচ্চা না হলে কি করতে হবে

বিবাহ, দাম্পত্য ও সন্তান এই শব্দগুলো যেন একে অপরের সাথে পরিপূরক। একটি সংসারে বাচ্চা হওয়ার কারণে যেমন আনন্দ নেমে আসে ঠিক তেমনি আবার একটি সংসারে বাচ্চা না হওয়ার ফলে সেই সংসারে অশান্তি চলে আসে। বিয়ের পর একটি দম্পত্তির জীবনে তাদের সন্তান আসবে এটাই তার পরিবার সহ সকলেই আশা করে থাকে। 


কিন্তু যখন বিয়ের অনেক দিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও তাদের সংসারে কোন বাচ্চা হয় না এটা নিয়েই অনেকের অন্ধকার জীবন শুরু যায়। আর এ কারণে স্বামী স্ত্রী বা তার পরিবার হতাশায় পতিত হয়।বিজ্ঞানী ভাষায় যাদের বাচ্চা হয় না তাদেরকে ফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব বলা হয়। এই বন্ধ্যাত্ব অনেক কারণেই হয়ে থাকে। 

সকলেই মনে করে থাকে যে বন্ধ্যাত্ব শুধু মেয়েদেরই হয় কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন অনেক ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব ছেলেদের মধ্যেও দেখা যায়। তবে এটা নিয়ে আর চিন্তার কিছু নেই। বর্তমানে এই সমস্যা দূর করতে বহু চিকিৎসা রয়েছে। তাহলে চলুন বাচ্চা হওয়ার জন্য কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারবেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করি। 

জীবন যাত্রার পরিবর্তন

বাচ্চা না হওয়ার প্রকৃত কারণ হিসেবে ধরা হয় জীবনযাত্রার মান সঠিক নয়। আমাদের অনিয়ম খাওয়া দাওয়া, অস্বাস্থ্যকর খাবার, অনিয়মিত ঘুম ও অপরিষ্কার পরিবেশে থাকা সব মিলিয়ে আমাদের যৌনজীবনে সমস্যা তৈরি করা। প্রায় মানুষের মধ্যেই একটি কমন সমস্যা হল অনেক রাতে ঘুমোতে যাওয়া এবং অনেক দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা। 

যার ফলে আমাদের সন্তান জন্ম দেওয়াতে বাধা সৃষ্টি করে এছাড়াও আমাদের জীবনযাত্রায় অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাই বিশেষজ্ঞরা সর্বপ্রথমে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন যে জীবন যাত্রার পরিবর্তন করে সঠিকভাবে পরিচালনা করা। তাতে যদি আপনি না করতে পারেন তাহলে বাচ্চা নেওয়ার আশা ছেড়ে দেওয়াই ভালো হবে। 

সঠিক চিকিৎসা

বর্তমানে পৃথিবীতে এমন কোন রোগ নেই যার চিকিৎসা নেই। একটি দাম্পত্যের মধ্যে স্বামী বা স্ত্রী উভয়ের মাঝেই সমস্যা হতে পারে তবে এর সঠিক চিকিৎসাও রয়েছে। পুরুষের সমস্যার মধ্যে শুক্রাণুর সমস্যা হল সবচেয়ে বড়। আর এই শুক্রাণুর সমস্যা দূর করতে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি রয়েছে। 

আবার নারীদের সমস্যার মধ্যেও ডিম্বাণুর সমস্যা, জরায়ুর সমস্যা সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান রয়েছে।তবে আপনাকে অবশ্যই সঠিক ডাক্তার এর কাছে গিয়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। কিছু চিকিৎসা রয়েছে অত্যন্ত ব্যয়বহুল যেগুলো হয়তো সব মানুষই নিতে পারে না। তবে এছাড়া অনেক চিকিৎসা রয়েছে যেগুলো নিয়ে আপনি বাচ্চা গর্ভধারণ করতে পারেন। 

সঠিক বয়সে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা

আপনারা অনেকেই জানেন যে নারীদের বয়সের সাথে সাথে সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা বা প্রজনন ক্ষমতা অনেকাংশে কমতে থাকে। বয়সের সাথে সাথে মেয়েদের ডিম্বাণুর মান কমে যায় যার ফলে বাচ্চা হতে সমস্যা দেখা দেয়। বয়স বাড়ার সাথে নারীদের দেহে ইউটেরিন ফাইব্রয়েড, ফেলোপিয়ান টিউবে ব্লক ও এন্ড্রমেট্রেসিসের মত বিভিন্ন সমস্যার বেড়ে যায়। 

যার ফলে সন্তান জন্মদানের উর্বরতা অনেকাংশেই কমে যায়। আমেরিকান এক গবেষণায় দেখা গেছে নারীদের ৩০ বছর বয়সের পর সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা ৭০ % হয়ে যায়। এছাড়াও ৩৫ থেকে ৪০ বছর বয়সের পর নারীদের সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা ৫০ % হয়ে যায়। আর এই সময়ে সন্তান গর্ভধারণের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেছেন সঠিক বয়সে বাচ্চা নেওয়ার কথা। 

খাদ্য অভ্যাসে পরিবর্তন আনা

গর্ভধারণ করার জন্য অবশ্যই আপনার খাদ্য অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা জরুরী। কেননা আপনি কি খাবার খাচ্ছেন এবং সেই খাবারের মধ্যে কতটুকু পুষ্টিগুণ রয়েছে সেগুলোর দেখে মনোযোগ দিতে হবে। বাচ্চা গর্ভধারণের জন্য অবশ্যই আপনাকে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। গর্ভধারণের জন্য আপনাকে অবশ্যই দুধ, ডিম ও বিভিন্ন বাদাম খেতে হবে। 

আর এই সময় অবশ্যই আপনাকে কিছু খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে যেন আপনার সন্তান গর্ভধারণের ক্ষেত্রে কোন রকমের বাধা তৈরি করতে না পারেন। কেননা আপনি যদি তেল জাতীয় খাবার বেশি করে খেয়ে থাকেন এতে আপনার পেটে চর্বি জমা হতে পারে এবং যার পরিপ্রেক্ষিতে সন্তান জন্মদানের সমস্যা সৃষ্টি করবে। 

মানসিকভাবে সুস্থ থাকা

অনেক দাম্পত্য রয়েছেন যাদের বাচ্চা না হওয়ার কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এটা খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। কারণ সেই সময় যদি বাচ্চা না হয় তাহলে পরিবার বা সমাজ থেকে বিভিন্ন ধরনের চাপ তৈরি হতে থাকে আমাদের উপরে। কিন্তু আপনি এই কথাগুলোর উপরে কোন কর্ণপাত না করে নিজের মতো করে ভালো থাকার চেষ্টা করবেন। 


এবং মেন্টালি সাপোর্ট দিবেন স্বামী-স্ত্রী একজন আরেকজনকে। এবং মনোবল কখনোই হারাবেন না। এর পরে আপনারা চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তার পরেও যদি না হতে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দুইজনে দিয়ে চিকিৎসা করাবেন। তারপরে দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার সমস্যা কেটে যাবে এবং আপনিও গর্ভধারণ করতে পারছেন। 

বাচ্চা না হওয়ার কি কি কারণ রয়েছে 

বাচ্চা না হওয়ার অনেকগুলো কারণ এই রয়েছে তার মধ্যে বিশেষ কারণ হলো বন্ধ্যাত্ব বা ফার্টিলিটি। ফলিকুলার সিনড্রোম নামে একটি সিনড্রোম রয়েছে যার কারণে দেখা যাচ্ছে মেয়েদের মাসিক নিয়মিতই হচ্ছে এবং ঠিকমতোই হচ্ছে তারপরেও ডিম বের হওয়ার কথা থাকলেও বের হচ্ছে না এবং এটি ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ হয়ে যাচ্ছে। 
বাচ্চা-না-হলে-কি-করতে-হবে
যেখানে পলিসিস্টিক ওভারের শতাংশ অনেক কম। তাই বাচ্চা না হওয়ার জন্য সিনড্রোম একটি বড় কারণ হতে পারে। আরেকটি সমস্যা হল পিসিও যেখানে অনেকগুলো সিস্ট গুলো পরিণত হয়ে ডিম ফেটে যায়। অনেকেই আছে যাদের এই সিস্ট ফেটে ডিম বের হয় না যার ফলে বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। 

বাচ্চা না হওয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হল ইউটেরাস। যেখানে বাচ্চা থাকে বা বড় হয় তার দুই পাশে দুটি নল থাকে যাকে আমরা বলে থাকি ফেডোপেন টিউব। এই  ফেডোপেন টিউব ওভারের কাছাকাছি গিয়ে শেষ হয়। ওভারি থেকে ডিম ফেডোপেন  টিউবে আসে। যেখানে স্প্যাম গিয়ে ফার্টিলাইজেশন করে থাকে। 

আর অনেক সময় এই ফেডোপেন  টিউব বন্ধ হয়ে যায় আর এটি বন্ধ হওয়ার মূল কারণ হলো ইনফেকশন। নারীদের জরায়ুতে ইনফেকশন টা বেশি হয়ে থাকে এবং সঠিক চিকিৎসার অভাব দেখা দেয় এবং এর ফলে সেই টিউব বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে বাচ্চা না হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। তাই যেকোনো সমস্যা হলে অবশ্যই সঠিক চিকিৎসা নেওয়া সকলেরই উচিত। 

আরো যেসব কারণে বন্ধুত্বের ঝুঁকি বাড়ছে

  • নারী পুরুষ স্বাবলম্বী না হয়ে বিয়ে করতে চায়না যার ফলে অনেক বয়স হয়ে যাওয়ার পরে বিয়ে করে আর সে কারণেই বাচ্চা হতে সমস্যা দেখা দেয়।
  • মেয়েদের অতিরিক্ত ওজন হওয়ার কারণেও অনেক সময় বাচ্চা গর্ভধারণ করে না। তাই অতিরিক্ত ওজন না করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন এতে বাচ্চা গর্ভধারণ ক্ষমতা হারাবে না।
  • অনেক মহিলাদেরই জরায়ুতে টিউমারের সমস্যা দেখা দেয় যার ফলে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়।তাই টিউমার হলে অবশ্যই ভালো চিকিৎসা নিয়ে ঠিক করার চেষ্টা করবেন।
  • নারী-পুরুষ উভয়ই অতিরিক্ত ধূমপান করলে তাদের হরমোনাল সমস্যা দেখা দেয়। নারী পুরুষ উভয়েরই যৌন হরমোন ক্ষরণের মাত্রা কমায় এবং স্পাম কাউন্টও কমিয়ে দেয়।
  • টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমানোর অন্যতম মাধ্যম হলো অ্যালকোহল। তাই অ্যালকোহল খাওয়ার কারণে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • আরেকটি বড় সমস্যা হল মাসিক চলাকালীন সময়ে বারবার যৌন মিলন করা। মাসিক চলাকালীন সময়ে সহবাস করলে বাচ্চা হতে সমস্যা হয়।
  • বিয়ের পর দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত পিল সেবন করার কারণে বাচ্চা জন্মদানে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত এবং দীর্ঘদিন ধরে পিল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • যে সকল নারীদের অনিয়ম মাসিক হয় এবং মাসিকের সময় অতিরিক্ত পেট ব্যথা করে তাদের সন্তান গর্ভধারনের সময় একটু সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। 

পিরিয়ডের কতদিন পর বাচ্চা নিতে হয় 

পিরিয়ডের পর কোন দিনটি বাচ্চা জন্মদানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয় নিয়েই এখানে আলোচনা করা হবে। অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে যে পিরিয়ড হয়ে যাওয়ার কতদিন পর যৌন মিলন করলে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে। তাই তাদের প্রশ্নের উত্তর হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে নিজস্ব আদর্শ উর্বর সময় নির্ধারণের জন্য মাসিক চক্রের হিসেব রাখা দরকার। 

আপনার হিসাবের মধ্যে সবথেকে ছোট চক্রের হিসাব রাখুন যেমন ধরুন ২৭ দিন এবং সেখান থেকে ১৮ দিন বিয়ে করুন এতে আপনি ৯দিন পেলেন আর এটাই আপনার প্রথম উর্বর দিন। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে আপনার মাসিক সেরে যাওয়ার পর ৯ দিনের মধ্যে আপনি যে যৌন মিলন করবেন তার মধ্যে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। 

আবার আপনার দীর্ঘতম চক্র হিসেবে ধরুন ৩০ দিন থেকে ১১ দিন বাদ দিন তাহলে ১৯ দিন থাকবে আরেকটি হলো আপনার শেষ উর্বর দিন। একাধিক মাস ধরে গণনা করা চক্র যদি ২৭ এবং ৩০ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করে তাহলে নয় থেকে উনিশ দিন এর মধ্যে আপনার উর্বর ক্ষমতা সবথেকে বেশি থাকে আর এই সময়ে সহবাস করার কারণে গর্ভধারণ সহজ হয়। 

প্রথম বাচ্চা হওয়াতে কেন সমস্যা হয়

অনেক দাম্পত্য রা রয়েছেন যাদের বিয়ের পর একটাও সন্তান জন্ম হয়নি। দেখা যাচ্ছে বছরের পর বছর পার হয়ে যাচ্ছে এবং বিয়ের বয়সে অনেক দিন হয়ে গেছে কিন্তু কোন ভাবেই বাচ্চা হচ্ছে না এ সমস্যাটা আমাদের সমাজে অনেকের মাঝেই আছে। এর প্রথম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় বিয়ের পর যারা অতিরিক্ত পরিমাণে যত্রতত্র পিল সেবন করে থাকে। 

অনেকে আছে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই যে কোন পিল খেয়ে থাকে এবং একসময় পরে গিয়ে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু তখন আর সহজে বাচ্চা গর্ভধারণ হতে চায় না। এছাড়া অনেকের আছে যারা অনেক বয়স হয়ে যাওয়ার পরে বিয়ে করে এবং তারপর পরে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা না করে কিছুদিন চলতে থাকে এতে করে তাদেরও প্রথম বাচ্চা হতে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। 

কেন গর্ভধারণ করতে পারছেন না দেখুন

গর্ভধারণ করতে না পারার পেছনে নারী এবং পুরুষ ও বাইরে বন্ধত্বের সমস্যা থাকতে পারে। সহজভাবে ধরে নেওয়া হয় বাচ্চা না হলে সেই দম্পতির মাঝে হয়তো নারীর কোন সমস্যা রয়েছে কিন্তু এটা একদম ভুল ধারণা। নারী ও পুরুষ উভয়ের মাঝে সমস্যা হতে পারে। তাই নিচে নারী ও পুরুষের সমস্যাগুলো তুলে ধরা হলো তাহলে আপনারাই বুঝতে পারবেন যে নারীর পাশাপাশি পুরুষেরও সমস্যা থাকে।

মহিলাদের বন্ধত্বের কারণ

  • ফ্যালোপিয়ান টিউব ব্লকেজঃ ডিম্বানু এবং শুক্রাণুর মিলন রোধ করে। 
  • জরায়ুর সমস্যাঃ অস্বাভাবিক জরায়ুর আকৃতি ফাইব্রয়েড ইমপ্ল্যান্টেশন কে প্রভাবিত করতে পারে।
  • বয়সঃ ৩৫ বছরের পর স্বাভাবিকভাবে উর্বরতা হ্রাস পেতে থাকে।
  • জরায়ুর ইশ্লেষ্মার সমস্যাঃ শুক্রাণুকে ডিম্বাণুর কাছে পৌঁছাতে বাধা তৈরি করে। 
  •  লাইফ স্টাইল অস্বাভাবিকঃ মানসিক চাপ, দ্রুত ওজন বৃদ্ধি, ধূমপান করা, শরীর দুর্বল থাকা, অনিয়ম খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম।
  • ডিম্বস্ফোটন ব্যাধিঃ হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা PCOS এর মত অবস্থার কারণে নিয়মিত ডিম ছাড়ার সমস্যা। 

পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ

  • কম শুক্রানুর সংখ্যাঃ ডিম্বানু নিষিক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে শুক্রাণুর অভাব।
  • শুক্রানুর গুণগত মান খারাপঃ শুক্রাণু দুর্বল অথবা অস্বাভাবিক আকারের হতে পারে।
  • শুক্রানুর গতিশীলতা সংক্রান্ত সমস্যাঃ শুক্রাণু ডিম্বাণুর দিকে সাঁতার কেটে যেতে অসুবিধা হয়।
  • ব্লকেজঃ শুক্রানুর প্রসবের ক্ষেত্রে শারীরিক ব্যথা।
  • লাইফস্টাইল অনিয়মঃ মানসিক চাপ, ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস।
  • চিকিৎসা বিদ্যা শর্তঃ ভেরিকোসিল সংক্রমণ এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।

বিয়ের পর দীর্ঘদিন পিল খেলে কি হয়

অনেক দম্পতিরা রয়েছে যারা বিয়ের পর পরে বাচ্চা নিতে চায় না। একে অপরের সাথে সময় কাটাতে চায় ঘুরতে চায় একজন আরেকজনকে চিনতে চায় আর তাই একটু দেরিতে বাচ্চা নেওয়ার ইচ্ছা করে।তাই খুব স্বাভাবিকভাবে তারা বিল সেবন করে থাকে। আমরা অনেকেই জেনে থাকি যে দীর্ঘদিন পিল খাওয়ার ফলে আমাদের পরবর্তী সময়ে বাচ্চা গর্ভধারণ করতে সমস্যা হয় এমনকি বাচ্চা হতে চায় না।

বিশেষ করে মনে করে থাকেন যে বিয়ের পর অতিরিক্ত বিল বেশি না খাওয়াই ভালো অন্ততপক্ষে একটি সন্তান জন্ম নেওয়ার পরে পিল খাওয়ার অভ্যাস করাটাই বেশি ভালো। আর এদিকে যদি আপনার বয়স একটু বেশি হয়ে যায় তাই আপনি পিল খাওয়ার ফলে আপনার বাচ্চা ধারণক্ষমতা আরো কমে যাবে।তবে বিয়ের পরে দীর্ঘদিন যাবত পিল খাওয়ার কারণে আপনার যে বাচ্চা হবে না এরকম কোন কিছুই এখনো গ্যারান্টি দিয়ে বলা যাবে না। 

কারণ বিশেষজ্ঞরা একটি ধারণা দিয়েছেন যে প্রায় ১০০ জনের মধ্যে পাঁচজন বন্ধ্যাত্ব হতে পারে এই পিল খাওয়ার কারণে। তার মানে এখানে একটু ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই আপনি চেষ্টা করবেন না খেয়ে কনডম ব্যবহার করার। এতে আপনার সমস্যা হয়তো কিছুটা হলেও কম থাকবে। 

পুরুষের বন্ধাত্ব দূর করার উপায় 

চিকিৎসা

পুরুষের বন্ধুত্ব দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা রয়েছে। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা আপনাকে এই বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি দিতে পারে। বর্তমানে এই আধুনিক বিশ্বে বাংলাদেশ সহ প্রায় সকল দেশেই পুরুষের বন্ধ্যাত্বের মত সমস্যা রয়েছে। তাই সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ও ওষুধ সেবন করার কারণে আপনিও এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। 

সার্জারি

আপনার যৌনাঙ্গে যদি এমন কোন সংক্রমণ হয়ে থাকে যার কারণে আপনার যৌনজীবনে ব্যাহত হচ্ছে তাহলে এমন কিছু সার্জারি রয়েছে যা করার কারণে আপনার এই সমস্যা দূর হয়ে বাচ্চা ধারণের ক্ষমতা ফিরে আসবে। 

সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তি

সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তি পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করতে বহুল পরিচিত আধুনিক একটি পদ্ধতি। স্বাভাবিক প্রজনন সম্পর্কিত সমস্যা গুলোর সমাধানের জন্য শরীরের বাইরে ডিম্বানু,  শুক্রানু ও ভ্রূণের পরিচালনা করা এবং যেকোনো পদ্ধতি বা চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তি কে এআরটি বলা হয়। 

বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত

আপনাদের অনেকের মনের প্রশ্ন রয়েছে যে বিয়ের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া উচিত বিয়ের পর কোন সময় আপনার জন্য বাচ্চা নেওয়া সঠিক হবে সেটা নিয়ে জানার আগ্রহ অনেকের মাঝে রয়েছে তাই এই আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করা হবে বিয়ের কতদিন পর বাচ্চা নিবেন সেটা ডিপেন্ড করে আপনার কিছু কাজের উপর তাহলে চলুন সেগুলো জেনে নিন। 
  • বাচ্চা নেওয়া নির্ভর করে আপনার বয়সের উপর।  আপনি যদি বেশি বয়সে গিয়ে বিয়ে করেন সেক্ষেত্রে আপনার বাচ্চা তাড়াতাড়ি নেওয়ায় উত্তম হবে তা না হলে পরে সমস্যা দেখা দিতে পারে।  
  • বিবেচনায় রাখতে হবে আপনার পরিবারে কারো মধ্যেই ইতিপূর্বে বন্ধ্যাত্বের হিস্টরি আছে কিনা এতে যদি থেকে থাকে তাহলে আপনার ক্ষেত্রে বাচ্চা নেওয়ার জন্য বেশি দেরি না করাই ভালো। 
  • ক্যারিয়ারের সাথে সমন্বয় করে অনেকেই বাচ্চা নিতে চায়। অনেক পুরুষ বা মহিলারা রয়েছে যারা ক্যারিয়ার গঠনের জন্য অনেক দেরিতে বাচ্চা নেওয়ার প্ল্যান করে থাকেন। সেক্ষেত্রে আপনাদের দুজনেরই যদি শারীরিক কোন সমস্যা না থেকে থাকে তাহলে একটু দেরি করা যেতে পারে। 
  • আপনাদের জন্য আরো ভালো একটা বিষয় হলো আপনারা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।কারণ তিনি আপনাদের দুজনকে কিছু পরীক্ষা বুঝতে পারবে যে কোন সমস্যা নেই সে ক্ষেত্রে যদি ডাক্তার বলে কিছুদিন দেরি করতে তাহলে করতে পারেন।  
বাচ্চা-না-হলে-কি-করতে-হবে

গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে জানুন

গর্ভধারণ হয়েছে কিনা এর কিছু প্রাথমিক লক্ষণ রয়েছে যা থেকে বোঝা যায় যে বাচ্চা গর্ভধারণ হয়েছে। এই লক্ষণগুলো খুব স্বাভাবিকভাবে সব সব মহিলাদের মধ্যেই পাওয়া যায়। তাহলে চলুন আমরা জেনে নিয়ে যে গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ কি কি রয়েছে। 
  • পিরিয়ড মিস হওয়া।
  • অবসাদ লাগা। 
  • শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। 
  • স্তনের পরিবর্তন অর্থাৎ বড় হয়ে যাওয়া। 
  • বমি বমি ভাব হওয়া। মাথা ঘুরতে থাকা।
  • শরীরের ক্লান্তি লাগা। 
  • ঘনঘন প্রসাবের বেগ। 
  • মেজাজ অতিরিক্ত খারাপ থাকা। 
  • খাবারের অনিহা দেখা দেওয়া।
  • অতিরিক্ত লালা বের হওয়া। 
  • বুক জ্বালাপোড়া করা।

FAQ সাধারণ প্রশ্ন উত্তর বাচ্চা না হলে কি করতে হবে

প্রশ্নঃ পুরুষের কি বন্ধ্যাত্ব হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই পুরুষের মধ্যেও বন্ধুত্ব রয়েছে।

প্রশ্নঃ মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব কেন হয়?
উত্তরঃ জন্মগত কারণেও বাধ্য হতে পারে আবার বিভিন্ন অসুখের কারণেও বন্ধুত্ব হয়ে থাকে।

প্রশ্নঃ কি খেলে মেয়েদের ডিম্বাণু তৈরি হয়?
উত্তরঃ বাদাম এবং বিভিন্ন ফলের বীজ খেলে ডিম্বাণু তৈরি হয়।

প্রশ্নঃ মেয়েরা বন্ধ্যাত্ব হলে কিভাবে বুঝব?
উত্তরঃ মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব হলে প্রধান কারণ হলো গর্ভধারণ করতে না পারা।

প্রশ্নঃ ঔষধ খেলে কি মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব হয়?
উত্তরঃ বিনোদনমূলক ঔষধ অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নারী ও পুরুষ উভয়ের মাঝে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

প্রশ্নঃ বেবি হওয়ার প্রধান লক্ষণ কি?
উত্তরঃ বাবু গর্ভধারণ হওয়ার পরে প্রধান লক্ষণ হল স্তন নরম হওয়া, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, খাওয়ার প্রতি অনীহা, বমি বমি ভাব, মাথা ঘুরতে থাকা, বার বার প্রসাদের বেগ ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ কোন খাবার খেলে দ্রুত গর্ভধারণ করা যায়?
উত্তরঃ সূর্যমুখীর বীজ, ডিমের কুসুম, ডালিম, মটরশুটি, মসুর ডাল, সালমান মাছ ও আনারস।

প্রশ্নঃ গর্ভধারণ না করার সবচেয়ে সাধারণ কারণ কি?
উত্তরঃ গর্ভধারণ না করার সাধারণ কারণ হলো নিয়মিত ডিম্বোস্ফাটনের অভাব।

উপসংহারঃ বাচ্চা না হলে কি করতে হবে

বাচ্চা না হলে কি করতে হবে এবং বাচ্চা কনসিভ করার যে সকল উপায় রয়েছে সে সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই আর্টিকেলের মধ্যে। যাদের গর্ভধারণ হতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে তারা চাইলে আর্টিকেলটি পরে এখান থেকে অনেক উপকার লাভ করতে পারেন। এবং এক সময় পর একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ মত চলতে থাকুন। 

আপনাদের যদি আমার আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং শিখতে চাই ব্লগ ওয়েবসাইটকে সাবস্ক্রাইব করে পাশেই থাকবেন। এবং এ বিষয় নিয়ে আরো কোন প্রশ্ন থেকে থাকলে দয়া করে মন্তব্য করে যাবেন আমরা আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url